দেশে প্রথমবারের মতো হোটেল-রেস্তোরাঁকে ভেজালমুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে মাননির্ধারক স্টিকার পদ্ধতি চালু হয়েছে। রাজধানীর ৫৭টি হোটেল-রেস্তোরাঁকে প্রথম পর্যায়ে এ পদ্ধতির আওতায় আনা হয়েছে। এসব রেস্তোরাঁর মধ্যে ১৮টিকে ‘এ+’ এবং ৩৯টিকে ‘এ’ গ্রেডের স্টিকার দেওয়া হয়েছে। এগুলোর খাবারের মানের উন্নতি-অবনতির সঙ্গে গ্রেডও বাড়বে বা কমবে।
রাজধানীর পল্টনে একটি হোটেলে রবিবার এ গ্রেডিং কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ভেজালমুক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে হলে উৎপাদন পর্যায় থেকে তদারকি শুরু করতে হবে। কীটনাশক দিয়ে উৎপাদিত ফসল যত ভালো পরিবেশেই রান্না ও পরিবেশন করা হোক না কেন, তা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি তৈরি করে। তাই নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হলে উৎপাদন পর্যায়ে তদারকি বাড়াতে হবে। এ জন্য কৃষি, স্বাস্থ্য এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় দরকার।’এ কর্মসূচির আওতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৫৭টি রেস্তোরাঁকে গ্রেডিং করে দুই রঙের স্টিকার বণ্টন করা হয়। এ ছাড়া সারা দেশের রেস্তোরাঁর সার্বিক মান বিবেচনায় মোট চার রঙের স্টিকার দেওয়া হবে। এসব স্টিকার দেখে ভোক্তারা রেস্তোরাঁর মান সম্পর্কে জানতে পারবে।
অনুষ্ঠানে কর্মকর্তারা জানান, এ গ্রেডিংয়ের আওতায় রেস্তোরাঁগুলোকে চার রঙের স্টিকার দেওয়া হবে। এ স্টিকার দেখেই ভোক্তারা সংশ্লিষ্ট রেস্তোরাঁর খাবারের মান সম্পর্কে ধারণা পাবে। যেসব রেস্তোরাঁ মোট ১০০ পয়েন্টের মধ্যে কমপক্ষে ৯০ অর্জন করতে পেরেছে, সেগুলোকে দেওয়া হয়েছে সবুজ স্টিকার। সবুজ রঙের স্টিকারযুক্ত ‘এ প্লাস’ ক্যাটাগরি অর্থাৎ উত্তম রেস্তোরাঁ হিসেবে বিবেচিত হবে। এ পর্যন্ত ১৮টি রেস্তোরাঁ সবুজ স্টিকার পেয়েছে। মান বিবেচনায় ৮০ থেকে ৮৯ পয়েন্ট অর্জনকারী রেস্তোরাঁকে দেওয়া হয়েছে নীল রঙের স্টিকার। নীল রং দ্বারা ‘এ’ ক্যাটাগরি বা ভালো খাবারের দোকান হিসেবে বিবেচিত হবে। নীল রঙের স্টিকার পেয়েছে ৩৯টি রেস্তোরাঁ। এ ছাড়া ৭০ থেকে ৭৯ পয়েন্ট অর্জনকারী রেস্তোরাঁকে ‘বি’ ক্যাটাগরিভুক্ত করে দেওয়া হবে হলুদ রঙের স্টিকার। হলুদ রং দ্বারা গড়পড়তা ভালো খাবারের দোকান বোঝানো হয়েছে। আর ৬০-এর চেয়ে কম পয়েন্ট অর্জনকারী হোটেলকে দেওয়া হবে কমলা রঙের স্টিকার। কমলা রং দ্বারা ভালো হওয়ার পথে অপেক্ষমাণ রেস্তোরাঁ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। কমলা রঙের স্টিকার পাওয়া রেস্তোরাঁ সার্বিক মানের উন্নতির মাধ্যমে পরবর্তী ধাপগুলোতে যেতে পারবে। স্টিকার পাওয়ার পর খাবারের মান নিয়মিত তদারকি করবে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
হোটেল-রেস্তোরাঁয় গ্রেডিং পদ্ধতি প্রবর্তন কর্মসূচির এ অনুষ্ঠান যৌথভাবে আয়োজন করে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি।
হোটেল-রেস্তোরাঁয় গ্রেডিং পদ্ধতি প্রবর্তন কর্মসূচিতে আরো বক্তব্য দেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী এ্যাড. কামরুল ইসলাম, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদ, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মাহবুব কবীর মিলন, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব এম রেজাউল করিম সরকার রবিন প্রমূখ।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন