১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০৮:৫০

চট্টগ্রামে বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে ৩ পরিবারের ৯ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে ৩ পরিবারের ৯ জনের মৃত্যু

ছবি: দিদারুল আলম

বন্দর নগরীর শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন চাক্তাই ভেড়ামার্কেট এলাকায় বস্তিতে আগুন লেগে ৩ পরিবারের ৯ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন।

শনিবার ভোর রাত সাড়ে ৩টার দিকে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এতে বস্তির প্রায় ২০০ ঘর পুড়ে গেছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলয়াস হোসেন জানান, তিন পরিবারের নয়জনের লাশ ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা থেকে উদ্ধার করেছেন। তাদের মধ্যে সাতজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন, রহিমা আক্তার (৫৫), তার দুই মেয়ে নাজমা (১৬) ও নাসরিন (৫) এবং ছেলে জাকির (১০), আয়শা আক্তার (৩৫) ও তার ভাগ্নে সোহাগ (১৯), হাসিনা (২২) এবং অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তি ও ৮ মাসের একটি শিশু।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক জসিম উদ্দিন জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধার কাজ শুরু করেন। চারটি ইউনিটের ১০টি গাড়ি ভোর সোয়া ৪টার দিকে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।

এদিকে সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিশাল আয়তনের ওই বস্তির টিনশেডের ছোট ছোট ঘরগুলো আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেছে। ঘরের ব্যবহার্য জিনিসপত্রের কোনো অস্তিত্ব নেই, সবই যেন ছাই হয়ে গেছে। নিহতদের স্বজনদের কান্নায় আশপাশের পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে।

ঘটনাস্থলে ক্ষতিগ্রস্ত হালিমা আক্তার বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো শনিবার রাত সাড়ে ১০টা বা ১১ টার দিকে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন পরিবারের সবাই। রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার দিকে আগুন আগুন বলে চিৎকার শুনতে পেয়ে নিজের কাছে হঠাৎ করে বেশ গরম লাগতে শুরু করলো। এরপরই ঘুম থেকে ওঠে ঘরের দরজা খুলতেই দেখি আগুনে গ্রাস করেছে আমাদের সামনের ঘরগুলো। এরপর কান্না-চিৎকার শুরু করে আমার স্বামী, দুই মেয়ে ও তিন ছেলেকে ঘুম থেকে ডেকে তুলি। কোনো রকমে নিজেদের যান নিয়ে আগুনের ভেতর থেকে বের হয়ে আসতে পারলেও ঘরের কোনো জিনিসই বাঁচাতে পারিনি। এখন কী করবো, কোথায় যাবো জানি না।’

জেলা প্রশাসক বলেন, নিহতদের প্রত্যেকের দাফনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট বাকলিয়া থানার ওসি প্রণব চৌধুরী জানান, রাজাখালী খালের পাশের ভেড়ামার্কেট সংলগ্ন খাস জমিগুলো অবৈধভাবে দখল করে কিছু প্রভাবশালী লোক ওই বস্তি গড়ে তুলেছে। স্থানীয় সাত্তার, ফরিদ, হেলালসহ পাঁচজন ওই বস্তিঘরগুলো থেকে ভাড়া তুলতেন। বস্তির একেকটি অংশও তাদের নামে পরিচিত।

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর