২১ মার্চ, ২০১৯ ১৭:০৬
তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন

উজিরপুরে ২২টি কেন্দ্র দখলে রাখতে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

উজিরপুরে ২২টি কেন্দ্র দখলে রাখতে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

বরিশালের উজিরপুরে আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী ২২টি কেন্দ্র দখলে করে জাল ভোটের ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বীরা। ইতিমধ্যে ২২টি কেন্দ্র চিহ্নিত করে সেখানে জালভোটের জন্য আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। এছাড়া অন্যান্য সকল কেন্দ্রে বাইরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে ভাড়াটে লোকজন এনে পরিবেশ অশান্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে আশংকা নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের। 

তৃতীয় ধাপে আগামী ২৪ মার্চ বরিশালের ৯টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান এবং পুরুষ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী হওয়ায় তাদের ইতিমধ্যে নির্বাচিত ঘোষণা করেছে কমিশন। এছাড়া বরিশাল সদর, বাকেরগঞ্জ, মুলাদী ও বানারীপাড়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা চেয়ারম্যান হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে বাবুগঞ্জে। 

২৪ মার্চের নির্বাচনে উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, হিজলায় চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন, বাবুগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, বাকেরগঞ্জে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন, মুলাদীতে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন এবং সদর উপজেলায় পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২ জন প্রার্থী।

তবে এর মধ্যে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়েছে উজিরপুর উপজেলায়। সেখানে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মজিদ সিকদার বাচ্চুর (নৌকা) পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল (কাপ-পিরিচ) এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাসদ নেতা আবুল কালাম আজাদ বাদল (আনারস)। 

এখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রত্যেক প্রার্থী তাদের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হলেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী মজিদ সিকদারের বিজয় সু-নিশ্চিত করতে স্থানীয় সাবেক এমপি কূটকৌশল অবলম্বন করেছে বলে অভিযোগ প্রতিদ্বন্দ্বীদের। তারা ২২টি কেন্দ্রের তালিকা করে প্রতিটি কেন্দ্রে জালভোটের উৎসব করার জন্য স্থানীয় একাধিক নেতাকে দায়িত্ব বণ্টন করে দেন। 

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হাফিজুর রহমান ইকবাল বলেন, বাইরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী জড়ো করা হয়েছে। তাদের দিয়ে ভোটের দিন সকালেই কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতির ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান। 

স্বতন্ত্র প্রার্থী জাসদ নেতা আবুল কালাম আজাদ বাদল বলেন, অন্য উপজেলা থেকে ভাড়াটে লোক এনে কেন্দ্র দখলের মাধ্যমে নির্বাচন বিতর্কিত করার চেস্টা চলছে। তিনিও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতিসহ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। 

এদিকে নৌকার প্রার্থী আব্দুল মজিদ সিকদার বাচ্চু ভোট ডাকাতির ষড়যন্ত্র চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা তাদের পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে ভোট দিতে পারবে বলে আশা করেন তিনি। 

জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, কেন্দ্র্র দখলের মতো কোন ঘটনা ঘটতে দেয়া হবে না। এ জন্য যথেষ্ট সংখ্যক আইনশৃংখলা বাহিনী নির্বাচনী মাঠে তৎপর থাকবে। আর উজিরপুরের নির্বাচনে বিশেষ দৃষ্টি রাখা হবে। জেলা প্রশাসক আশ্বস্ত করেন ভোটারদের নিরাপত্তায় যা কিছু করণীয় সব কিছু করছে প্রশাসন। ভোট কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা হলে সংশ্লিষ্টদের জেলে ঢোকানোর হুশিয়ারি দেন জেলা প্রশাসক। 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর