২১ মার্চ, ২০১৯ ১৭:২০

রাজধানীর সড়কে শৃঙ্খলা আনতে করণীয়

অনলাইন ডেস্ক

রাজধানীর সড়কে শৃঙ্খলা আনতে করণীয়

সংগৃহীত ছবি

রাজধানী ঢাকা শহরে প্রায় ২৫০টি বাস কোম্পানীর ৭০০০ বাস বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। মহানগরীর বেশির ভাগ যাত্রী কর্মস্থলসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে এ সকল বাসের মাধ্যমে প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকে। মূল সড়ক দিয়ে যত ধরনের পরিবহন চলাচল করে তার মধ্যে শুধুমাত্র বাসকেই রাস্তার নির্দিষ্ট স্টপেজে যাত্রীর জন্য দাঁড়ানোর প্রয়োজন পড়ে। 

ফুটপাত দিয়ে যে সকল পথচারী চলাচল করে তার একটি বড় অংশ বাসের যাত্রী। ঢাকা মহারগরীতে প্রতিদিন চলাচলরত লাখ লাখ পথচারীকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন কাজ। বাসগুলো যদি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাহলে বাসের যাত্রী অনেকটা নিয়ন্ত্রিত হতে বাধ্য। 

রাজধানীতে চলাচলরত বাসের সার্বিক পরিবেশ ভালো নয়। অধিকাংশ বাসই লক্কর ঝক্কর, ছিটগুলো খুব নোংড়া, নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না, নির্ধারিত আসনের চেয়ে বেশি সিট লাগানো থাকে বিধায় যাত্রীদের উঠানামা ও সিটে বসা কষ্টকর হয়, বাসগুলো যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা করে, বাসের কোন টিকেট সিস্টেম নেই, মালিকরা বাস ড্রাইভারের নিকট কন্ট্রাকে দিয়ে বাস চলাচল করায়, দক্ষ ড্রাইভারের সংকট রয়েছে, বিভিন্ন কোম্পানির মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা আছে, ভাড়ার হার নির্দিষ্ট নয়, বাস স্টপেজ ও যাত্রী ছাউনী অনেকস্থানে সুনির্দিষ্ট থাকলেও সেখানে সব সময় বাস দাঁড়ায় না, গেট-লক করে ডাইরেক্ট যাত্রী নেয়া হয়, বড় বাসের সংখ্যা কম। এ ধরনের নানাবিধ কারণে ঢাকা শহরে বাস ব্যবস্থায় সমস্যা বিরাজ করছে।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে সুপারিশ করেছে ডিএমপি-

বাসের মডেল নির্ধারণ

ঢাকা শহরের মূল সড়কগুলো থেকে ছোট বাস উঠিয়ে দিয়ে শতভাগ বড় বাস চালানো যেতে পারে। প্রত্যেকটি বাস হবে দুই দরজা বিশিষ্ট। একই সঙ্গে সামনের দরজা দিয়ে যাত্রী উঠবে এবং পিছনের দরজা দিয়ে যাত্রী নামবে। এতে যাত্রী উঠানামার সময় কম লাগবে। বাসে যাত্রী সহজে উঠানামা ও বসার জন্য সিটগুলো হবে পাশাপাশি দুই সিটের আসন বিশিষ্ট। মাঝখানে দুইজন যাত্রী অনায়াসে চলাচলের জায়গা থাকবে। মাঝ খান দিয়ে এক লাইনে যাতে যাত্রী দাঁড়াতে পারে। বাকি লাইন দিয়ে যাত্রী যাতে চলাচল করতে পারে। সিটগুলোর মাঝে একটু জায়গা বেশি থাকবে যাতে যাত্রী ঢুকতে ও বের হতে সমস্যা না হয়। 

যাত্রীদের অফিসে যাওয়ার সময় বা শপিং করার সময় হাতে ছোট-খাটো ব্যাগ থাকতে পারে। বাসের মধ্যে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকলে এ ধরনের যাত্রীদের উঠানামা করা কঠিন হয়। বাসগুলোর দুইটি হাইড্রোলিক দরজা থাকবে যাতে যাত্রী উঠা-নামা করার পর চালক সুইচ টিপে অটো ব্যবস্থায় হাইড্রোলিক দরজা বন্ধ করতে পারেন।

বাস স্টপেজের মডেল

বাস স্টপেজগুলো ইন্টারসেকশন হতে একটু দুরে সুবিধাজনক স্থানে হবে। প্রতিটি বাস স্টপেজে যাত্রী দাঁড়ানোর জন্য যাত্রী ছাউনি থাকলে ভালো হয়। বাস স্টপেজে বাসের টিকেট কাউন্টার থাকতে হবে। যেখানে যাত্রী ছাউনী নেই সেখানে ছাতা ও চেয়ার-টেবিল দিয়ে টিকেট কাউন্টার করতে হবে। কতটুকু এলাকার মধ্যে বাস স্টপেজ হবে তা বাস স্টপেজ শুরু এবং বাস স্টপেজ শেষ সাইন বোর্ড দিয়ে চিহ্নিত করতে হবে। বাস স্টপেজ শুরু ও শেষের সাইনবোর্ডের মাঝে ফুটপাত ঘেঁষে কতটি বাস দাঁড়াতে পারবে তা ব্লক আকারে রোড মার্কিং করে চিহ্নিত করতে হবে।

শতভাগ যাত্রীকে টিকিট নিয়ে বাসে উঠতে হবে 

ঢাকা শহরের বাসের যাত্রীরা যে কোন স্থান হতে বাসে উঠা-নামা করতে পারে বিধায় সড়কে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করে। যদি প্রত্যেক যাত্রীর মধ্যে এ ধারণা জন্মে এবং তা বাধ্যতামূলক করা হয় যে প্রত্যোক যাত্রীই নির্দিষ্ট কাউন্টার হতে টিকেট কিনে বাসে উঠবেন। টিকিট ছাড়া কোন যাত্রীকে বাসে তোলা হবে না। তাহলে প্রত্যেক যাত্রীই বাধ্য হয়ে টিকেট কাউন্টারে গিয়ে উপস্থিত হবেন। এতে যাত্রীরা টিকেট কাউন্টার হতে লাইন দিয়ে টিকেট কিনে লাইন দিয়ে বাসে উঠবেন। এতে রাস্তায় যানজট কমে গিয়ে শৃঙ্খলা বৃদ্ধি পাবে। 

প্রথমে কাগজের টিকেট হলেও পর্যায়ক্রমে ই-টিকেটিং সিস্টেমে যেতে হবে। প্রতিটি টিকেটে ভাড়ার পরিমাণ এবং কোথা থেকে উঠবে ও নামবে তা লেখা থাকবে। নির্দিষ্ট কোম্পানির একই রুটে একই ধেনের টিকেট দিতে হবে। টিকেট বিক্রয়লব্ধ অর্থ কোম্পানির বাসের সংখ্যা ও ট্রিপ অনুযায়ী মালিরিা ভাগ করে নিবেন। এ থেকে চালক ও হেলপারদের বেতন দিবেন।

পথিমধ্যে বাস দরজা বন্ধ করে চলবে

এক কাউন্টার হতে টিকেট নিয়ে যাত্রী উঠার পর বাসের দরজা বন্ধ করে রাখতে হবে। পরবর্তী স্টপেজে গিয়ে  ফুটপাত ঘেঁষে না দাঁড়ানো পর্যন্ত বাসের দরজা খোলা যাবে না। এতে ইন্টারসেকশনসহ যেখান-সেখান হতে যাত্রীরা বাসে উঠতে পারবেন না। বাধ্য হয়ে যাত্রীদের নির্দিষ্ট বাস স্টপেজে গিয়ে বাসে উঠতে হবে।

লক্কর-ঝক্কর বাস দ্রুত মেরামত করতে হবে

একজন যাত্রী যখন বাসে উঠবেন তখন বাসের ভিতরে ও বাহিরে লক্কর-ঝক্কর অবস্থা হলে ওই বাসে যাত্রী উঠার রুচি আসবে না। যাত্রীদের আকৃষ্ট করার জন্য সব সময়ই বডি রং করে ফিটফাট রাখতে হবে। বাসের ভিতরের সিট নষ্ট হয়ে গেলে তা দ্রুত মেরামত করতে হবে। বিআরটিএ এর পক্ষ হতে লক্কর-ঝক্কর বাসের ফিটনেস নবায়ন করা ঠিক হবে না। বাস লক্কর-ঝক্কর থাকলে তা মেরামতে বাধ্য করার জন্য ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ হতে ডাম্পিং এ পাঠিয়ে, মেকানিক এনে মুচলেকা দিয়ে মালিক বাসটি ওয়ার্কশপে নিয়ে যাবেন।

বাসের ভিতরে ও বাহিরে নিয়মিত পরিষ্কার করা

বিভিন্ন বাস পরিদর্শন করে দেখা গেছে, বাসের ভিতরে প্রচুর ময়লা জমে থাকে। ছিটগুলো মারাত্বক নোংরা। বাসের ভিতরে ও বাহিরে এবং ছিটগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। কাপড়ের ছিট না করে রেক্সিনের ছিট করলে নিয়মিত পরিষ্কার করতে সুবিধা হয়। খুলে পরিষ্কার করা যায় এমন কাপড়ের সিট কভার লাগানো যেতে পারে। ছিটগুলো এতই নোংরা যে তার উপর কোন যাত্রী বসলে তার পরনের নিজের কাপড়গুলো নোংরা হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়।

কন্ট্রাকে না চালিয়ে নিয়োগ ভিত্তিক চালানো

বাসগুলো মালিকদের পক্ষ থেকে চালকদের নিকট কন্ট্রাকে দেয়া হয়। এতে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ উপার্জনের জন্য অনেক সময় চালকগণ অসম প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। এতে চালক ও হেলপারের উপর মালিকের তেমন কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না। কন্ট্রাকে না দিয়ে চালকদের বেতনভূক্ত করা যায় কিনা সে বিষয়টি চিন্তা করে দেখতে হবে। চালক ও হেলপারগণের কোম্পানীর পক্ষ হতে নিয়োগপত্র থাকলে ভাল হয়।

চালক ও হেলপারদের নির্দিষ্ট পোশাক 
কাজের সুবিধার জন্য চালক ও হেলপারদের কোম্পানির পক্ষ হতে নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম দিলে সুবিধা হয়। ইউনিফর্মের সঙ্গে তাদের নেম প্লেট থাকবে।

শ্রমিক কল্যাণ
প্রতিদিন ঢাকা শহরে বাস হতে অনেক টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। এই টাকা আদায়ের ক্ষেত্রে কোন পক্ষ হতে কোন রশিদ দেয়া হয় না। পরিবহন শ্রমিকের জন্য একটি পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ ফান্ড থাকা উচিত। বাস চালানো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। এতে দুর্ঘটনাসহ বড় ধরনের অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাসের চালক ও হেলপারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তাদের কল্যাণে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয় না সমিতির পক্ষ থেকে। ঢাকা মহানগরীতে প্রতিদিন বাস হতে যে টাকা চাঁদা আদায় করা হয় এর কোন স্বচ্ছতা নেই। শ্রমিক কল্যাণে কোন অর্থ ব্যয় করা হয় না বলে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়। কল্যাণ ফান্ড পরিচালনার জন্য স্বচ্ছ কমিটি ও পরিচালনা নীতিমালা থাকা উচিত।

বাস সার্ভিস পরিচালনার ক্ষেত্রে সঠিক তদারকি
নিয়ম মোতাবেক বাস সার্ভিসগুলো পরিচালিত হচ্ছে কিনা সে বিষয়গুলো পরিবহন মালিক ও সমিতির পক্ষ হতে তদারকি করতে হবে। মালিকরা বা তাদের প্রতিনিধি প্রতিটি বাস কাউন্টারে গিয়ে বাসের সেবার মান পরীক্ষা করবেন। নিয়মিত গোপনে বাসে উঠে যাত্রী সেবার মান পরীক্ষা করবেন। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের কোন অভিযোগ/পরামর্শ আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখবেন। বাসের ভিতর মালিক পক্ষের মোবাইল নম্বর/নির্দিষ্ট অ্যাপস লেখা থাকবে যেখানে যাত্রী সাধারণ কোন অভিযোগ/পরামর্শ থাকলে ফোন করতে পারবেন। নিয়ম মোতাবেক সার্ভিসটি পরিচালিত হচ্ছে কিনা ট্রাফিক পুলিশের এসি, টিআই, সার্জেন্টগণ তার নিশ্চয়তা বিধান করবেন। ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ হতে নিয়মিত কাউন্টার পরিদর্শন করে, যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে সেবার মান উন্নত করবেন।

যোগ্যরাই টিকে থাকবে
বাস সার্ভিস সঠিকভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে যে সকল কোম্পানি, মালিক, চালক সুন্দরভাবে বাস পরিচালনার নিয়ম কানুন মেনে চলবে কোম্পানির পক্ষ হতে তাদের পুরষ্কারের ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের উন্নত পরিচালনা পদ্ধতি ও কৌশল দিয়ে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। যে সকল কোম্পানি বেশি বেশি অনিয়ম করে, যাদের বিরুদ্ধে বেশি বেশি মামলা ও রেকারিং হয়, যাদের সার্বিক যোগ্যতা ভালো নয় তাদের প্রয়োজনে রুট পারমিট বাতিল করতে হবে।

দক্ষ ও অভিজ্ঞ চালক তৈরিতে ব্যবস্থা নেয়া 
সমগ্র বাংলাদেশের বাস সার্ভিস পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক বড় বড় বেসরকারি কোম্পানি রয়েছে যাদের বাসের সংখ্যাও অনেক বেশি। নামি-দামী কোম্পানিগুলোর উচিত সরকারি পর্যায়ের পাশাপাশি তাদের পরিচালনায় দক্ষ ড্রাইভার তৈরির জন্য ড্রাইভিং ট্রেনিং স্কুল পরিচালনা করা। যেখানে নতুন ড্রাইভার তৈরি হবে এবং পুরাতন ড্রাইভারের নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।

বাস রাখার স্থান
ঢাকা শহরে যে সকল বাস সার্ভিস পরিচালিত হয় তাদের অনেকেরই বাস রাখার নিজস্ব গ্যারেজ নেই। অনেকে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে সরকারি রাস্তায় বাস রেখে দেন। প্রত্যেক কোম্পানির নিজস্ব বাস রাখার স্থান থাকতে হবে। ট্রিপ শেষে অচল বাসগুলো যেখানে-সেখানে রেখে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না। সিটি কর্পোরেশনের কোন রাস্তায় বাস স্থায়ীভাবে পার্কিং করে রাখতে হলে সিটি কর্পোরেশন ও ডিএমপি ট্রাফিকের মতামতসহ সুনির্দিষ্ট নিয়মের ভিত্তিতে ফাঁকা স্থানে পার্কিং চার্জ দিয়ে বাস পার্কিং করা যেতে পারে।

বাসের অবস্থান চিহ্নিতকরণ
যাত্রী সাধারণের সুবিধার জন্য একটি নির্দিষ্ট রুটের বাসের অবস্থান কোথায় তা ওই  কাউন্টারে স্থাপিত ডিজিটাল মাসেজ বোর্ডের মাধ্যমে বা মোবাইল  ফোনে নির্দিষ্ট অ্যাপসের মাধ্যমে দেখা যেতে পারে।

বাসের গায়ে রুটের বর্ণনা উল্লেখ করা

যাত্রীরা যাতে ওই বাসের গমনাগমনের রুট সহজে বুঝতে পারেন এ কারণে বাসের গায়ে পরিষ্কারভাবে রুটের বর্ণনা লেখা থাকতে হবে। অনেক সময় বাসের গায়ে ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডে রুটের বর্ণনা উল্লেখ করা হয়।

বাসের সিস্টেম উন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বয় সভা

আরটিসি মিটিং এ শুধু মাত্র বাসের রুট পারমিট প্রদান নয়, বাসের সিস্টেম উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ হতে বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সিসি ক্যামেরা/ভিডিও মনিটরিং  

ঢাকা শহরের বিভিন্ন ইন্টারসেকশনে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। পর্যায়ক্রমে আরও স্থানে লাগানো হবে। ডিএমপি ট্রাফিকের ভিডিও টিম বিভিন্ন ফুটওভার ব্রিজসহ গোপন স্থান হতে যানবাহনের অনিয়মের ভিডিও করে থাকে। পর্যায়ক্রমে ঢাকা শহরের প্রতিটি ইন্টারসেকশন ও বাস স্টপেজ সিসি ক্যামেরা নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে হবে। নিয়ম না মেনে চলাচল করলে তা মনিটরিং করে ব্যবস্থা নেয়া যাবে।

বাস স্টপেজে ট্রাফিক ডিউটি দেয়া

প্রতিটি বাস স্টপেজের শৃঙ্খলা নিশ্চিত হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য ডিএমপি ট্রাফিকের সদস্যদের বাস স্টপেজেও ডিউটি দিতে হবে। ট্রাফিক পুলিশ প্রত্যেকটি চালককে মটিভেট করে, প্রয়োজনে প্রসিকিউশন দিয়ে পর্যায়ক্রমে সুনির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে বাস চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

লক্কর-ঝক্কর বাস পর্যায়ক্রমে তুলে দেয়া

ঢাকা শহরের লক্কর-ঝক্কর বাসগুলো পর্যায়ক্রমে তুলে দিয়ে, সে জায়গায় সকল সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত নির্দিষ্ট মডেলের বাস নামাতে হবে। মডেল আউট না হলেও বাসের বাস্তব আয়ুষ্কাল শেষ হয়েছে মর্মে বাহ্যিক প্রতিয়মান হলে সে বাস ঢাকায় চলতে দেওয়া ঠিক হবে না।

বাসরুট ফ্রান্সাইজ এবং প্রচলিত বাস ব্যবস্থাপনা 

ঢাকা শহরের বাসের সেবার মান উন্নত করার লক্ষ্যে সরকার বাসরুট ফ্রান্সাইজ করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এটি করতে সময় লাগবে। ফ্রান্সাইজ ব্যবস্থাটি পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন রুটে করা উচিত হবে। বাসরুট ফ্রান্সাইজ করার পাশাপাশি লক্কর-ঝক্কর বাসগুলোকে তুলে দিতে হবে এবং প্রচলিত বাসগুলোর সেবার মান উন্নত করতে হবে।

ইন্টারসেকশন ম্যানেজমেন্ট

ট্রাফিক দৃষ্টিকোণ থেকে ইন্টারসেকশন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ইন্টারসেকশন দিয়ে পথচারী এবং যানবাহন বিভিন্ন দিকে চলাচল করে। প্রতিটি ইন্টারসেকশনে সংশ্লিষ্ট সকলে বিশেষ গুরুত্ব না দিলে সবচেয়ে বেশি অনিয়ম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ইন্টারসেকশনের শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে নিয়ম মোতাবেক ট্রাফিক সিগন্যাল, রোড মার্কিং ও ট্রাফিক সাইন থাকা আবশ্যক। 

ইন্টারসেকশনে পথচারীরা সিগন্যাল মেনে জেব্রা ক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হবেন। প্রতিটি যানবাহনকে স্টপলাইন বরাবর দাঁড়াতে হবে। বাম লেন সব সময় যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। ইন্টারসেকশন হতে একটি নির্দিষ্ট দুরত্বের মধ্যে কোন রিক্সা বা যানবাহন পার্কিং করা যাবে না। ইন্টারসেকশনে কোন বাসের যাত্রী দাঁড়াতে পারবে না। বাসগুলো দরজা বন্ধ করে প্রতিটি কাউন্টারে গিয়ে যাত্রী উঠা-নামা করলে যাত্রীরা বাধ্য হয়ে বাস স্টপেজে গিয়ে দাঁড়াবে।

ঢাকা শহরে প্রাইভেট গাড়ির সংখ্যা কমাতে হলে উন্নত বাস ব্যবস্থাপনার কোন বিকল্প নেই। প্রাইভেট গাড়ির যাত্রীদের জোর করে বাসে তোলা যাবে না। সঠিক ভাড়ায় উন্নত সেবা দিয়ে অধিকাংশ যাত্রীদের এসি/নন-এসি বাসমূখী করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন পরিবহন মালিক, শ্রমিক, ডিএমপি, ডিটিসিএ, বিআরটিএ, বিআরটিসি, সিটি কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সঠিক উদ্যোগ। এখানে সঠিক পরিস্থিতি উপস্থাপন করে মিডিয়াও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সংশ্লিষ্ট সকলের সদিচ্ছা থাকলে ঢাকা শহরে ভালো বাস সার্ভিস উপহার দেয়া সম্ভব। সূত্র: ডিএমপি নিউজ

বিডি প্রতিদিন/২১ মার্চ ২০১৯/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর