২২ মার্চ, ২০১৯ ২০:৫৮

বরিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭, চালক আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:

বরিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭, চালক আটক

হাসপাতালে আহত-নিহতদের স্বজনদের ভিড়

বরিশাল-বানারীপাড়া সড়কের তেতুলতলা এলাকায় বাস ও মাহেন্দ্র আলফার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৪ জন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে নগরীর বিমান বন্দর থানা পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে একটি মাহেন্দ্র আলফা (থ্রি হুইলার) অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা যাচ্ছিলো। অপরদিকে বানারীপাড়া থেকে সেবা পরিবহনের ব্যানারে দুর্জয় নামে একটি বাস বরিশাল নগরীর দিকে যাচ্ছিলো। তেতুলতলা এলাকা অতিক্রমকালে বিপরীতমুখি বাস ও মাহেন্দ্র আলফার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনার পর বাসটি না থামিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ মাহেন্দ্র আলফাকে চাপা দিয়ে গন্তব্যের দিকে পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ এবং স্থানীয় জনতা হতাহতদের উদ্ধার করে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। হাসপাতালে পৌঁছার পর কর্তব্যতর চিকিৎসক মাহেন্দ্র আলফার যাত্রী নগরীর কাশীপুর এলাকার মো. খোকন (৩০) ও গণপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাহেন্দ্র চালক মো. সোহেল (২৫), ঝালকাঠীর বাসিন্দা বরিশাল বিএম কলেজের গনিত বিভাগের স্নাতকোত্তর ১ম বর্ষের ছাত্রী শিলা হালদার (২৪), বাকেরগঞ্জের মানিক সিকদার (৪০), দুর্গাসাগর এলাকার পারভীন বেগম (৩০) এবং একই এলাকার মেহেরুন্নেছা (৫০) মৃত ষোষণা করেন।

আহতদের মধ্যে বাবুগঞ্জের দুর্গাসাগর এলাকার মোকলেছ হাওলাদারের শিশু ছেলে তাইউম (৭), তন্নী আক্তার (১৭), বিএম কলেজের স্নাতকোত্তর বর্ষের ছাত্র মো. সুমন (২৫), দুলাল হাওলাদার (৩০) এবং আবদুল্লাহকে (৭) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদের মধ্যে শিশু তাইউমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়।

ক্ষুব্ধ স্বজনদের অভিযোগ, দুর্জয় পরিবহন নামে ওই বাসের বেপরোয়া চলাচলের কারণেই প্রাণ গেছে ৭ যাত্রীর। মুখোমুখি সংঘর্ষের পরও বাসটি সেখানে না থামিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ মাহেন্দ্র চাপা দিয়ে গন্তব্যে পালিয়ে যাওয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। তারা দুর্ঘটনার সকল দায়ভার বাসের চালকের উপর চাপিয়েছেন। স্বজনরা ঘাতক বাসের চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

নিহত বিএম কলেজের মেধাবী ছাত্রী শিলার সহপাঠীরা এই দুর্ঘটনার জন্য সরকারের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন। এদিকে নিহতদের পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছ দাবি তুলেছেন তাদের স্বজনরা।

বরিশাল বিমান বন্দর থানার ওসি আব্দুর রহমান মুকুল জানান, দুর্ঘটনার পর বাসসহ চালক পালিয়ে যায়। পরে বাসটি আটক করা হলেও চালক আত্মগোপন করে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সদর উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের আরজিকালীকাপুর এলাকা থেকে ঘাতক বাস চালক আব্দুল জলিলকে তার নিজ গ্রাম থেকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা দায়েরসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর