জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলটের বিরুদ্ধে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে জমি দখলের অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে রাজশাহী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে খালেদ মাসুদ পাইলট সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন। মূলত তাকে দেশবাসীর কাছে হেয় প্রতিপন্ন ও সম্মানহানি করার উদ্দেশ্যে একটি মহল এমন মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন পাইলট।
পাইলট বলেন, ‘আমি বৈধভাবে গত বছরের মে মাসে গোদাগাড়ীর ফাদিলপুর মৌজায় ৬৬ শতাংশ জমি কিনেছি। ওই বছরই আমার নামে নামজারিও হয়েছে। আমি অবাক হয়েছি যে, আমার বিরুদ্ধে জমি দখলের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আমাকে দেশবাসির কাছে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
তিনি বলেন, আমি ওই এলাকায় থাকি না। আমি থাকি রাজশাহী শহরে। বরং অন্যায়ভাবে আমাকেই তারা অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছে। স্বভাবতই যখন আমাকে গালিগালাজ কেউ করবে তখন আমার মন খারাপ হবে। তিনি (বিপক্ষের জাহাঙ্গীর আলম) আমাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। তিনি ওই এলাকায় আসলেই একজন ভয়ঙ্কর মানুষ। তিনি যখন আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন, তখন আমি আমার পরিচিতজনদের কথা তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। আমি জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক, আমার পরিচিত মানুষ থাকতেই পারে।’
পাইলট আরও বলেন, ‘সকালে (বৃহস্পতিবার) সংবাদ সম্মেলনে আমার কলরেকর্ড সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা আংশিক। আমি যা বলেছি তা আগের এবং পরের কথোপকথনগুলো এডিট করে উপস্থাপন করা হয়েছে। মূলত আমাকে হেয় করতেই এমনটি করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিসিবিতে আমার একটা সম্ভাবনা আছে। যাতে আমি বিসিবিতে যেতে না পারি সেজন্য পরিকল্পিতভাবে এমন জমি দখলের মিথ্যা নাটক করা হয়েছে।’
সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, ‘আমি কখনো কোনো দল করিনি। আমি জাতীয় দলের ক্রিকেটার ছিলাম। আমার এলাকার মেয়র কিংবা প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। জনপ্রতিনিধি যখন যে দলের থাকবে, তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো থাকবে। কেননা, ব্যক্তি নয় বরং চেয়ারটার সঙ্গে আমার সম্পর্ক।’
এর আগে, বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী প্রেসক্লাবে প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলের চেষ্টা ও প্রশাসনকে দিয়ে হয়রানির হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলে জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ব্যক্তি জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলটের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত ১১ এপ্রিল গোদাগাড়ীর চকনারায়নপুর গ্রামের ১১ জনের সম্পত্তি প্রায় ২ বিঘা ধানী জমি বিক্রি করি। এরপর ক্রেতা নাসরিন সুলতানা জমির দখল নেন। কিছুদিন পর ওই জমি খালেদ মাসুদ পাইলট জোরপূর্বক ঘিরে রাখে। জমির প্রকৃত মালিক জমিতে গেলে তাদের হুমকি দেয় ও জমির বর্গাচাষিকে মামলা দিয়ে পুলিশ দিয়ে আটক করায়। পাইলট হুমকি দিয়ে বলে, ‘রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে দিয়ে সবার ব্যবস্থা করবে। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে আমার বন্ধু, তাকে বললে সে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি দিয়ে সবাইকে সাইজ করে দিবে।’
তিনি আরও বলেন, পরে তারা তাদের কেনা জমি দখলের জন্য স্থানীয় রিশিকুল ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে আবেদন করেন। গ্রাম আদালত খালেদ মাসুদ পাইলটকে বসার জন্য নোটিশ পাঠালেও সেখানে তিনি হাজির হননি। এরপর খালেদ মাসুদ পাইলট আমাকে ফোন দিয়ে হুমকি দেয়, ‘ওই জমি অন্য মানুষের থেকে ক্রয় করেছি। এ জমিতে যদি কেউ আসে তাকে প্রশাসন দিয়ে ঝামেলায় ফেলবো। আমি জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার আমার কথা সবাই শুনবে।’ এই ফোন রেকর্ডের একটি কপিও আমাদের কাছে আছে। তাই অন্যায়-অত্যাচার থেকে আমরা মুক্তি চাই। জমির প্রকৃত মালিক যেন জমি ফিরে পায়, সেটার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।
পাইলটের বিরুদ্ধে করা সংবাদ সম্মেলনে জমির ক্রেতা নাসরিন সুলতানার ভাই শাহিনুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই