১৩ মার্চ, ২০১৮ ১০:১৮

৩০০ টাকায় জীবন যে আর চলে না!

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

৩০০ টাকায় জীবন যে আর চলে না!

কুমিল্লা শালবন বিহারসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে কাজ করা শ্রমিকরা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন

কুমিল্লা শালবন বৌদ্ধ বিহার। দেশের জনপ্রিয় একটি দর্শনীয় স্থান। এখানে প্রতি বছর আয় হয় কোটি টাকার বেশি। এই স্থানটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখেন ৩৬ জন শ্রমিক। দেশের অন্য শ্রমিকদের বেতন ৫০০ টাকার বেশি হলেও প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের শ্রমিকদের বেতন ৩০০ টাকা করে। এই টাকা দিয়ে তাদের অমানবিক জীবন-যাপন করতে হয়। এমন করুণ অবস্থা বগুড়ার মহাস্থানগড়, বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ, যশোরের সাগরদাঁড়ি মাইকেল মধুসূদন দত্ত কমপ্লেক্স, নওগাঁ রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি, ঢাকা লালবাগের কেল্লা, সোনারগাঁয়ের পানাম সিটিসহ বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকার চার শতাধিক শ্রমিকের।

শালবন বৌদ্ধবিহারের শ্রমিকদের একজন আবদুস সাত্তার (৭০)। এ বিভাগে কাজ করছেন ৪৫ বছর ধরে। জীবনভর স্বপ্ন দেখেছেন চাকরি স্থায়ী হবে, সুখের মুখ দেখবেন। তা আর হলো না। তিনি বলেন, বেতনটা বাড়লে পরিবার নিয়ে একটু ভালো চলতে পারতাম। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, ৩০০ টাকা বেতনে জীবন যে আর চলে না।

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ঘাগুরদুয়ার থেকে কুমিল্লায় এসে কাজ করেন রাজু আহমেদ। তিনি বলেন, আমি যে বেতন পাই তাতে মাসে দুবার বাড়িতে গেলেই খরচ হয়ে যায়। আমরা অল্প বেতনে চলতে পারছি না।

কুমিল্লা শালবন বৌদ্ধবিহার ও ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান ড. আহমেদ আবদুল্লাহ বলেন, দৈনিক শ্রমিকদের জন্য আলাদা একটা খাত তৈরি করা যেতে পারে। যা থেকে তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা যায়। তাদের ৩০০ টাকা বেতন অপ্রতুল বলেও তিনি মনে করেন।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালক আলতাফ  হোসেন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন কাজ করা লোকজনকে বঞ্চিত করতে চাই না। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। তারা আবেদন করলে যোগ্যতা অনুযায়ী স্থায়ী কাজের সুযোগ পাবে।

খুলনার ফুলতলা দক্ষিণ ডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্সে কর্মরত প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের দৈনিক মাস্টার রোল শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম কমিটির সভাপতি অলকেশ রায় বলেন, আমরা আর কত পরীক্ষা  দেব। এখানে অনেকে সারা জীবন কাটিয়ে দিয়েছে। আমাদের স্থায়ী করে নেওয়ার আদেশ রয়েছে আদালতের। আমরা আমাদের স্থায়ী নিয়োগ ও বেতন বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর