মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

পিয়াস করিম সম্পর্কে যা বলেছিলেন আইনমন্ত্রী

পিয়াস করিম সম্পর্কে যা বলেছিলেন আইনমন্ত্রী

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত অধ্যাপক ও টিভি টকশো আলোচক পিয়াস করিমকে ক্ষমতাসীন দলের অনেকে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী উল্লেখ করলেও আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক তাকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক বলে মন্তব্য করেছেন। আইনমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে লিফলেট বিতরণের অভিযোগে পিয়াস করিমকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে গিয়েছিল। আর তার বাবা আওয়ামী লীগ নেতা থাকলেও পাকিস্তানি বাহিনীর শর্তে মুক্তিযুদ্ধের শেষ সময়ে কুমিল্লা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। শনিবার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে যুগ্ম জেলা জজ ও সমমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের বিচারকাজে দক্ষতা বাড়ানো-সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
পিয়াস করিম প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, তার বাবা (এম এ করিম) অত্যন্ত স্বনামধন্য একজন আইনজীবী ছিলেন। তিনি কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। ১৯৭১ সালের মাঝামাঝিতে বাসার গেট থেকে পিয়াস করিমকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে যায়। কারণ পিয়াস করিম সম্পর্কে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে খবর ছিল, তিনি লিফলেট বিতরণ করতেন। তখন তার বয়স ছিল ১৩ বছর। এরপর পাকিস্তানি বাহিনীর শর্ত অনুযায়ী মুচলেকা দিয়ে পিয়াস করিমকে ছাড়িয়ে আনেন তার বাবা। শর্তে বলা হয়েছিল, তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করতে পারবেন না। আনিসুল হক বলেন, শর্তানুযায়ী মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এম এ করিম কুমিল্লা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। তখন তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের ডান্ডিকার্ড (পরিচয়পত্র) দিতেন; যদিও আমি নিইনি। ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে হত্যার বিষয়ে পিয়াস করিমের বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধের ২০-২১ বছর আগে মৃত একজন ব্যক্তি সম্পর্কে এ ধরনের কথা শুনলে আমার খুব কষ্ট লাগে। এ ধরনের বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা দুঃখজনক।
এদিকে ‘পিয়াস করিম মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে লিফলেট বিতরণ করতেন’ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আইনমন্ত্রীর এমন বক্তব্য প্রকাশ হওয়ার পর মন্ত্রিসভা থেকে তাকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে যুবলীগ। রবিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রেসিডিয়াম সদস্যদের এক সভায় এ দাবি জানানো হয়। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল করার প্রস্তুতি উপলক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্যের জন্য আইনমন্ত্রীর অপসারণ দাবি করেন। সভাপতির বক্তব্যে ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের চেহারা আস্তে আস্তে জনগণের কাছে পরিষ্কার হতে চলেছে।
এ কে খন্দকার, লতিফ সিদ্দিকীর পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পিয়াস করিমের পক্ষে সাফাই বক্তব্য দেওয়ার ঘটনা এ ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে। সরকারের ঘনিষ্ঠ আরও কারও থেকেও এমন বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য আসতে পারে। এ জন্য যুবলীগ নেতা-কর্মীদের সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর