শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

চবির শাটল ট্রেনের অর্ধেক আসনই ছাত্রলীগের দখলে!

চবির শাটল ট্রেনের অর্ধেক আসনই ছাত্রলীগের দখলে!

'মরিচ লাল ও লাল রে, ভাইঙ্গা গেলে জ্বলবে চিরকাল রে...', 'তোমার আমার মাঝে তফাত কেন রাখ, একটু আদর করে জামাই বলে ডাক...' এগুলো কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের গানের অংশ নয়। এগুলো হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন চলাকালে ছাত্রলীগ সমর্থিত শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে গাওয়া গান। তারা বগিভিত্তিক রাজনীতি করে নিয়ন্ত্রণে রাখেন রেলের বগিগুলো। তবে ছাত্রলীগ বলছে, বগিভিত্তিক সংগঠনগুলো ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে নয়। ফলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, চবিতে ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল হওয়ার পরও বগিভিত্তিক সংগঠনগুলোর শক্তিশালী রাজনীতির উৎস কোথায়? এ ব্যাপারে প্রশাসনের নীরবতাও প্রশ্নবিদ্ধ। চবি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দুটি শাটল ট্রেন রেলপথে চলাচল করে। প্রতিটিতে ৯টি করে বগি আছে। প্রতি বগিতে আসন আছে ১৪৪টি করে। সে হিসাবে মোট আসন আছে ২ হাজার ৫৯২টি। এর মধ্যে প্রতি বগিতে ছাত্রলীগের দখলে থাকে ৬০টি করে ১ হাজার ৮০টি আসন। এভাবে অর্ধেক আসনই দখলে রাখে ছাত্রলীগ। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শাটল ট্রেনের আসন মানেই ছাত্রলীগের দখল। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বসার কোনো সুযোগই নেই। বলা যায়, নেই অধিকারই। কালেভদ্রে বসতে পারাটাও সোনার হরিণের মতো। আবার কেউ বসলে নেতারা এলে তাকে অবশ্যই সিট ছেড়ে দিতে হয়।

চবির প্রক্টর প্রফেসর মো. সিরাজ-উদ-দৌলা বলেন, শিক্ষার্থীরা গান করতে পারে। তবে উচ্ছৃঙ্খলতা কিংবা অশ্লীল গান করা তো উচিত নয়। জানা যায়, শাটল ট্রেনে ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ন্ত্রিত বগিভিত্তিক গ্রুপগুলো হলো ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স), কনকর্ড, একাকার, সিঙ্টি নাইন (উয়ি আর ডেঞ্জার), উল্কা, ফাইট ক্লাব, খাইট্টা খা, সাম্পান, অল ওয়েজ (উয়িথ অ্যাবয়ড আর), ওয়ারিয়র্স, সিএফসি, ওরিয়ন, ককপিট, এপিটাফসহ আরও অনেক। ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত বগিভিত্তিক এসব সংগঠনের কাজ হলো ইচ্ছামত সিট দখল, তুচ্ছ অজুহাতে রেল থামিয়ে রাখা, বগিতে উচ্ছৃঙ্খল গান গাওয়া, মেয়েদের লক্ষ্য করে কটূক্তি, নিজেদের দখলে থাকা সিটে কেউ বসলে উঠিয়ে দেওয়া ও ধূমপান করা। এ নিয়ে পরস্পরের মধ্যে সংঘর্ষ, হামলা-মামলা, বহিষ্কারের ঘটনাও কম ঘটেনি।

জানা গেছে, প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ভর্তির সময় শাটল ট্রেনের ভাড়া বাবদ ৫৭৯ টাকা দিতে হয়। চবি কর্তৃপক্ষ বছরে এ খাতে রেলওয়েকে ৬ লাখ টাকা দেয়। বর্তমানে ২১ হাজার শিক্ষার্থী আছেন।

 

 

সর্বশেষ খবর