সড়ক যোগযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'পদ্মাসেতু প্রকল্প থেকে বিশ্ব ব্যাংক সরে যাওয়ার পর ভেবেছিলাম আমার সামনে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ পদ্মা সেতু নির্মান। এলিভেটেড এক্সপ্রেস ঝুলে গিয়েছিল। সেটা হবে কি হবে না- এ নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। মেট্রোরেল নিয়েও অনিশ্চয়তা ছিল, কোন জায়গা দিয়ে যাবে, জমির ব্যাপারটা নিয়েও অনিশ্চয়তা ছিল। এখন সব চ্যালেঞ্জ আমি অতিক্রম করেছি।'
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'পদ্মা সেতুর মূল কাজ, নদী শাসন সব কাজ আল্লাহপাকের ইচ্ছায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা শুরু করেছি। মেট্রো রেলের প্রথম টেন্ডার হবে আগামী মাসে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসের কাজও গতমাসে শুরু করে দিয়েছি। পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসের চেয়েও এখন আমার কাছে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো পরিবহনে বিশৃংখলা, রাস্তায় বিশৃংখলা রোধ। এই বিশৃংখলার জন্য দুর্ঘটনা ঘটছে, অসহনীয় জানজট পরিস্থিতির সৃস্টি হচ্ছে।'
আজ রবিবার একদিনের সরকারী সফরে বরিশাল এসে নগরীর সিমান্তবর্তী গড়িয়ারপাড় এলাকায় নির্মানাধীন মহাসড়ক এবং প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিককের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সড়ক যোগযোগ ও সেতু মন্ত্রী।মন্ত্রী বলেন, 'বরিশালে এসে আমার কাছে মনে হলো এটা ইজি বাইকের শহর। বরিশালের সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যাচ্ছে ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, ব্যাটারী চালিত যানগুলোর কারনে। এতে একদিকে বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে, অন্যদিকে এক সময় এই শহর আনলিভঅ্যাবেল (বসবাসের অযোগ্য) শহর হয়ে যাবে, আনলিভঅ্যাবেল।'
তিনি বলেন, 'সরকারের সংশ্লিস্ট সবগুলো দপ্তরের সাথে কথা বলেছি, তাদের সমন্বয়ের মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে উত্তরন ঘটাতে হবে। এখানে কো-অর্ডিনেশনের (সমন্বয়) অভাব রয়েছে। সমন্বয় হলে অবৈধ এবং অননুমোদিত যান, যেগুলো সংকটের সৃস্টি করছে, দুর্ঘটনা এবং জানজটের কারন হচ্ছে, সেগুলো নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হবে। এই লক্ষ্যে সংশ্লিস্ট দপ্তরকে এক সঙ্গে বসে সমাধান খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছি।'
মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, 'যান্ত্রিক যানের অনুমোদন তো বিআরটিএ ছাড়া অন্য কোন দপ্তর দিতে পারেনা। কিন্তু আমি শুনে অবাক হলাম, বরিশালে সিটি করপোরেশন যান্ত্রিক যানের অনুমতি দিয়েছে। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিল, তাকে বলেছি, আপনারা কোন অবস্থায়ই যান্ত্রিক যানের অনুমতি দিতে পারেন না।'
মন্ত্রী বলেন, 'আমি মহাসড়কে এই সব অবৈধ যান চলতে দেব না। অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে নভেম্বর থেকে অভিযান শুরু হয়েছে। যতদিন পর্যন্ত জানজট এবং দুর্ঘটনা সহনীয় পর্যায়ে না আসবে, ততদিন এই অভিযান চলবে। এই অভিযানের অন্যমত উপাদান হচ্ছে ফিটনেস বিহীন গাড়ী এবং লাইসেন্স বিহীন চালক।'
ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক কর্মকান্ড সম্পর্কে প্রশ্ন করতেই মন্ত্রী বলেন, 'রাজনীতি দিয়ে বরিশালের প্রবলেমগুলো ঢাকবেন না।'
এর আগে নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল পরিদর্শনে গেলে সেখানেও তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।
এসব প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, 'দলীয় শৃঙ্খলার বিষয়টি দলের উপর ছেড়ে দিন। এটা দলের অভ্যন্তরীন বিষয়। এখানে দলের বিষয়ে প্রশ্ন করবেন না।'
বিডি-প্রতিদিন/ ২৩ নভেম্বর ২০১৪/জান্নাত