বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

শীতের রোদে শুঁটকি বানিয়ে আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন

শীতের রোদে শুঁটকি বানিয়ে আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন

'গহিরা' আনোয়ারা উপজেলার সমুদ্র উপকূলীয় একটি গ্রামের নাম। পর্যটন এলাকা পারকি সৈকত লাগোয়া এই গ্রামের বেশ পরিচিতি রয়েছে। একসময় কালোবাজারিদের স্বর্গরাজ্য হিসেবে দেশময় পরিচিত ছিল এই গ্রাম। কালোবাজারি বন্ধ হয়ে এলে বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষা এই সুন্দর গ্রামটি ক্রমে মৎস্যজীবীদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে। গ্রামের মানুষ তো বটেই, আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম ও বাঁশখালী, চকরিয়া উপজেলার মানুষও ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য ইলিশ ও অন্যান্য মৌসুমে ছুটে আসেন এই গ্রামে। অনেকে তিন-চার মাসের জন্য আস্তানা গাড়েন উপকূলেই। চার বছর ধরে শীত মৌসুমে সামুদ্রিক মাছ শুকিয়ে ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য চকরিয়া থেকে গহিরায় আসছেন অনেকে। শীতের শুষ্কতায় মাছ শুকিয়ে তারা আর্থিক উষ্ণতা লাভ করেন। এদের সংখ্যা নেহাত কম নয়, প্রায় দেড় শ। ৮ থেকে ১০ জনের দল গঠন করে তারা শুঁটকির কাজে নেমে পড়েন। প্রতিটি দলে থাকেন একজন দলপ্রধান। হাজার পঞ্চাশেক টাকা লগ্নি করে ও গতর খেটে তিন মাসে সেই টাকা দু-তিন গুণ করে বাড়ি ফেরেন। এই উপার্জনের টাকা দিয়ে অনেকের পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে বলে জানালেন একটি দলের প্রধান মোহাম্মদ সোলায়মান। সরেজমিন জানা যায়, গহিরা উপকূলীয় এলাকার মৎস্যজীবীরা চলতি শীত মৌসুমে (নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি) গভীর সমুদ্রে জাল বসিয়ে প্রচুর পরিমাণ ছোট ছোট চিংড়ি, লইট্যা, উলা ও ছুরি মাছ আহরণ করেন। ২৪ ঘণ্টার দুই জোয়ার, দুই ভাটায় দিনে চারবার মাছ আহরণ করেন তারা। গ্রামের অন্তত ৫০০ জেলে সাগরে তাদের প্রতিটি নির্ধারিত ফারে (জাল বসানোর জায়গা) সরাসরি জাল বসিয়ে ইঞ্জিন নৌকা ও সাম্পানে করে মাছগুলো কূলে নিয়ে আসেন। এরপর ঠিকা দরে যার যার প্রয়োজন ও সুবিধা অনুসারে মাছ কিনে তা শুকানোর ব্যবস্থা করেন। মাছ শুকানোর কায়দাও অভিনব। সাগর সৈকতে প্রতিটি দল বড় আকারের পলিথিন বিছিয়ে মাছগুলো ছিটিয়ে দেয়। দু-তিন দিনের রোদেই সেগুলো শুকিয়ে যায়। এরপর নানা প্রজাতির মাছ আলাদা করে সেগুলো বড় বড় বস্তায় রেখে দেওয়া হয়। শহর থেকে পাইকার গেলে তাদের কাছে সেগুলো বিক্রি করা হয়।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর