বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
পরীক্ষামূলক যাত্রা আজ

চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রুটে নয়া ট্রেন বিজয় এক্সপ্রেস

বিজয়ের মাসে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে 'বিজয় এক্সপ্রেস' ট্রেন। বাংলাদেশ রেলওয়ে যাত্রীদের সুবিধা বিবেচনা করে চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রুটে নতুন এ আন্তঃনগর ট্রেনটি চালু হচ্ছে আগামী শুক্রবার। নতুন এ ট্রেনে ১২টি কোচ সব সময় সংযুক্ত থাকবে। ৬০০ যাত্রী পরিবহন ক্ষমতাসম্পন্ন 'বিজয় এক্সপ্রেস' উদ্বোধন করবেন রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক এমপি। ট্রেনটি চালু হলে চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহবাসীর ট্রেন চলাচলের পথে অন্যান্য সুবিধাসহ প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময় কমে আসবে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রীর একান্ত সচিব এ কে এম গোলাম কিবরিয়া মজুমদার।

'বিজয় এক্সপ্রেস'টি ময়মনসিংহ স্টেশনে ওইদিন সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের জন্য সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। আজ সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহ স্টেশনের দিকে পরীক্ষামূলক যাত্রা করবে বলে জানান পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. মোজাম্মেল হক। তবে 'বিজয় এক্সপ্রেস' ট্রেনটি চালুর দিন থেকে কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস, এগারসিন্ধু গোধূলি, ২৪২, ২৭৬, ২৭৮, ২৭৫, ২৪৩, ২৬৩ ও ৪০ নং লোকাল ট্রেনের সময়সূচি আংশিক পরিবর্তন আনা হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রকৌশলী মো. তাফাজ্জল হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ রুটে 'বিজয় এক্সপ্রেস' নামের নতুন আন্তঃনগর ট্রেন চালু হলে যাত্রীসেবার মানসহ চট্টগ্রাম থেকে আট থেকে নয় ঘণ্টার মধ্যে ময়মনসিংহে পোঁছানো সম্ভব হবে। এতে আন্তঃনগর এ ট্রেনটির জন্য রেক তৈরিসহ সব কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। তিনি বলেন, আটটি স্টেশনে বিরতি দেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ভাটিয়ারী, ফেনী, লাকসাম, কুমিল্লা, ভৈরব বাজার, কিশোরগঞ্জ, গৌরীপুর ও ময়মনসিংহ স্টেশন। চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ছাড়বে, ময়মনসিংহ পোঁছবে বিকাল সাড়ে ৪টায় এবং ময়মনসিংহ থেকে রাত ৮টায় ছেড়ে চট্টগ্রাম পোঁছবে ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে। ট্রেনটির সাপ্তাহিক বন্ধ থাকবে বুধবার। তবে নতুন আন্তঃনগর এ ট্রেনের ভাড়া নির্ধারণ, টিকিট ছাপানো, সিট বণ্টনসহ অন্যান্য প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বলে জানান পূর্বাঞ্চল চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার (সিসিএম) মো. বেলাল উদ্দিন। তিনি জানান, ট্রেনটির রেক কম্পোজিশনের মধ্যে থাকবে একটি-এফসি, দুইটি- শোভন চেয়ার, পাঁচটি- শোভন, একটি-পাওয়ার কার (ইপিবি), একটি-ডাইনিং কার (ইপিবি) এবং দুইটি ইএলআরসহ মোট ১২/১৪টি কোচ। কোচগুলোর মধ্যে প্রায় ৬০০ যাত্রী পরিবহন করা হবে। একইভাবে চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত এসি বার্থ-১২২৫, এসি সিট-৮১৭, স্নিগ্ধা-৬৭৯, প্রথম বার্থ-৭১০, প্রথম চেয়ার-৪৭৫, শোভন চেয়ার-৩৫৫ ও শোভন-২৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এভাবে কম-বেশি অন্যান্য স্টেশনে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। ট্রেনটিতে বেসরকারিতে প্রাথমিকভাবে অন-বোর্ড সাভির্স হিসেবে চলবে। এখন থেকে চট্টগ্রাম থেকে আট থেকে নয় ঘণ্টার মধ্যে ময়মনসিংহ পোঁছানো সম্ভব হবে। আগে লাগতো প্রায় ১৩ ঘণ্টার উপরে। মাত্র ৩৭৫ কিলোমিটার দূরত্ব পোঁছাতে দীর্ঘ সময় লাগার কারণে ট্রেনটিতে যাত্রীর পরিবর্তে বেশির ভাগ সময় মালামাল পরিবহন করা হতো। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন চট্টগ্রামে বসবাসরত ময়মনসিংহবাসীর সুবিধার কথা বিবেচনা করে এ আন্তঃনগর ট্রেনটি চালু করার প্রস্তাব করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এতে ময়মনসিংহবাসীর নতুন আশার আলো শুরু হতে যাচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন দিগন্তও। ট্রেনটি চালু হলে যাত্রী সেবার পাশাপাশি রেলও লাভজনক হবে। তবে রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক এমপি ও রেলপথ সংসদীয় কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর সমন্বয়ে রেলকে আরও আধুনিকায়ন করার জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এতে রেলকে আরও গতিশীল ও উন্নয়নসহ লাভজনক হিসেবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে বলে জানান।

 

 

সর্বশেষ খবর