সোমবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা
অবরোধ ও পরিবহন সংকট

অস্থির চালের বাজার

টানা অবরোধ ও পরিবহন সংকটে অস্থির চালের বাজার। ফলে সাত জেলা থেকে রাজধানী ঢাকায় চাল সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। পাশাপাশি সড়ক ও মহাসড়কে পেট্রলবোমা ছুড়ে মারার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এমন সংকটের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন পাইকারি ও খুচরা চাল ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া নতুন নতুন সংকটের ফলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পণ্য পরিবহন ভাড়া। ফলে সবকিছুর উত্তাপ ছড়িয়েছে চালের বাজারে। এতে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের মধ্যে দেখা দিয়েছে নানা দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনা। কেউ কেউ বলছেন, হাতে গোনা আয় দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। গত কয়েক দিনে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে বাড়তি দামে চাল বিক্রি করার তথ্য পাওয়া গেছে।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে সব ধরনের চালই আগের চেয়ে কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। ভালো মানের প্রতি কেজি নাজিরশাইল ও মিনিকেট ৫৫-৫৭ টাকা আর সাধারণ মানের একই চাল ৪৮-৫২ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। লতাশাইল বিক্রি হয়েছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়। এ ছাড়া মাঝারি মানের প্রতি কেজি বিআর-২৮ ৪২-৪৪, পাইজাম ৪২-৪৬ এবং স্বর্ণা, চায়নাসহ মোটা চাল ৩৬-৩৮ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। জানতে চাইলে ঢাকা জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মোহন মিয়া বলেন, ধানের দাম বাড়লেও মিল পর্যায়ে চালের দাম বাড়েনি। তবে ঢাকা বা অন্য যেসব এলাকার ব্যবসায়ীরা চাল নিয়ে যান তাদের খরচ বেড়েছে। অবরোধের আগে দিনাজপুর থেকে ঢাকায় চালভর্তি ট্রাকের ভাড়া ছিল ১৭-১৮ হাজার টাকা। এখন ৩০-৩৫ হাজার টাকায়ও তা পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া দাম বাড়তে থাকলে সাধারণ মানের মোটা চালের দাম প্রতি কেজি ৫০ টাকায় ঠেকতে পারে। চাল ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে প্রতিদিন দেড় হাজার টনের বেশি চালের চাহিদা রয়েছে যার বেশির ভাগই আসে শেরপুর, নওগাঁ, নাটোর, দিনাজপুর, রংপুর, কুষ্টিয়া ও জয়পুরহাট জেলা থেকে। অবরোধ শুরুর আগে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার ট্রাক চাল আসত রাজধানীতে। অবরোধের কারণে তা অনেক কমে গেছে। আগে ১ ট্রাক চাল দিনাজপুর থেকে ঢাকায় আনতে খরচ পড়ত ১৮ হাজার টাকা। এখন ৩০-৩৫ হাজার টাকা হয়েছে বলে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের জামাল রাইস এজেন্সির মালিক জামাল উদ্দিন জানান। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাংলাদেশ অটোরাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম খোরশেদ আলম খান বলেন, টানা ২০ দিনের অবরোধের কারণে কৃষক পর্যায় থেকে চালকলে ধান আনা এবং চালকল থেকে পাইকারি বাজারে চাল পৌঁছানোর ব্যয় বেড়ে যাওয়াই দাম বাড়ার প্রধান কারণ।

 

সর্বশেষ খবর