শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা
ঠিকাদারদের ভয়ভীতি

সাত কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিল ছাত্রলীগ

সাত কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিল ছাত্রলীগ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পুলিশের ১টি তদন্ত কেন্দ্র নির্মাণ কাজের টেন্ডার ছাত্রলীগ নামধারীরা তাদের কব্জায় নিয়ে গেছে। এসব নির্মাণকাজে ব্যয় হবে ৭ কোটি টাকা। অভিযোগ উঠেছে, সাধারণ ঠিকাদারদের ভয়ভীতি দেখানোর কারণে দরপত্র দাখিল হয়েছে খুবই কম। এভাবে গতকাল বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর এবং গণপূর্ত বিভাগের ৭ গ্রুপের এই কাজ বাগিয়ে নেওয়া হয়। তবে এই দুই দফতরের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম জানান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক নির্মাণের জন্য গত ১১ জানুয়ারি টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছিল। ৯৯ লাখ টাকার এই কাজের দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গতকাল। এ ছাড়া মুলাদী উপজেলায় ৪৭ লাখ টাকা, বাবুগঞ্জে ৪৭ লাখ, গৌরনদী ৬১ লাখ, কাঁঠালিয়ায় ৬১ লাখ টাকা এবং নলছিটিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণের ৭০ লাখ টাকার টেন্ডারেরও দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গতকাল। টেন্ডার বক্স খুলে দেখা যায়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক নির্মাণ কাজের বিপরীতে ৩টি এবং অন্যগুলোতেও দরপত্র জমা পড়েছে ৩টি করে। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় প্রভাবশালীরা বাইরের কাউকে দরপত্র কিনতে দেননি। এদের মধ্যে বিএম কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শুভ সেন সরকারি জনতা ব্যাংকের অফিসার। তিনি সদর আসনের এমপির নাম ভাঙিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক নির্মাণ কাজ নিয়েছেন। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের প্রভাবে স্থানীয় ছাত্রলীগ মুলাদী ও বাবুগঞ্জের ২টি স্কুল নির্মাণ কাজ, বরিশাল-১ আসনের এমপির নাম ভাঙিয়ে গৌরনদীর স্কুল নির্মাণ এবং বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের কাজটিও নিয়ে নিলেন প্রভাবশালীরা। সাধারণ ঠিকাদারদের অভিযোগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের ক্যাডার প্রকৃতির ঠিকাদার নামধারী কিছু লোক প্রভাবশালী নেতাদের এই কাজ পাওয়ার পথ সুগম করে দেন। কিন্তু পেশাদার ঠিকাদাররা কোনো দরপত্রেই অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিনি মুলাদীর স্কুল নির্মাণের কাজটি ছেড়ে দিয়েছেন। কারণ মুলাদীর ছাত্রলীগ সভাপতির মা খুবই অসুস্থ, তার চিকিৎসায় অর্থ দরকার। এ কারণে মানবিক দৃষ্টিকোণ দিয়ে তিনি ওই দরপত্রে অংশ নেননি। শুভ সেন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে এমপির নাম ভাঙিয়ে টেন্ডারে অংশগ্রহণের বিষয়ে বলেন, তিনি তার নিজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে দরপত্র জমা দেননি। কাজটি তিনি পাবেন কিনা, তাও নিশ্চিত নয়।

৩৫টি দরপত্র বিক্রির বিপরীতে টেন্ডার বাক্সে ৭টি জমা পড়া প্রসঙ্গে বরিশাল গণপূর্ত অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, এই কাজে অংশগ্রহণ করতে হলে প্রতিটি দরপত্রের সঙ্গে আর্নেস্ট মানি বাবদ ১০ লাখ টাকার পে-অর্ডার আবশ্যক। যারা দরপত্র কিনেছেন, তাদের অনেকেরই ১০ টাকার পে-অর্ডার দেওয়ার সক্ষমতা নেই। যারা পে-অর্ডারসহ দরপত্র জমা দিয়েছেন, তাদের মধ্য থেকেই ঠিকাদার নির্বাচন করা হবে।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর