শনিবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা
ভ্রাম্যমাণ আদালতে চারজনকে দণ্ড

ট্যানারির বিষাক্ত বর্জ্যে পোলট্রি ফিড তৈরি

রাজধানীর হাজারীবাগে ট্যানারির বিষাক্ত বর্জ্য দিয়ে মুরগি ও মাছের খাবার তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়েছেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ অপরাধে মালিকসহ চারজনকে আটক করে দণ্ড দেওয়া হয়। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাজারীবাগ বেড়িবাঁধ এলাকার ঝাউচরে পুতুল এন্টারপ্রাইজ নামের অবৈধ ফিড কারখানায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় ৫০ হাজার কেজি বিষাক্ত খাদ্য জব্দ করাসহ কারখানাটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। অভিযান পরিচালনা করেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা। এ সময় র‌্যাব-২ এর উপ-পরিচালক ড. দিদারুল আলম ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের প্রতিনিধি ডা. লুৎফর রহমান উপস্থিত ছিলেন। আনোয়ার পাশা জানান, কারখানার মালিক আবুল কালামকে দুই বছরের দণ্ড এবং ২ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ড; আবদুল জলিলকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের কারাদণ্ড; হাসান শেখকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের কারাদণ্ড এবং ফারুক হাওলাদারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। আবুল কালাম জানান, দুই বছর ধরে ট্যানারির বিষাক্ত বর্জ্য দিয়ে তিনি এসব ফিড তৈরি করেন। ট্যানারির বর্জ্যরে শুঁটকি ১০ টাকা কেজি হিসেবে কিনে এটি গুঁড়া করে ২০-২৫ টাকা কেজি হিসেবে গাজীপুরসহ আশপাশের খামারিদের কাছে বিক্রি করেন। খামারিরা মাছ বা মুরগির খাবারের সঙ্গে এটি মিশিয়ে নেন। খামারিদের কাছে এটা হাজারীবাগের বাংলা প্রোটিন নামে পরিচিত। তবে কেউ অর্ডার দিলে মিক্সার মেশিনের মাধ্যমে ভুট্টাসহ অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে পরিপূর্ণ ফিড তৈরি করে দেন। আনোয়ার পাশা আরও জানান, অল্প খরচে বেশি লাভের আশায় বিষাক্ত এসব ফিডের মাধ্যমে মানবদেহে ক্রোমিয়াম প্রবেশ করছে। এ ফিড মাছ বা মুরগি খেলে মলমূত্রের মাধ্যমে খানিকটা বের হয়ে গেলেও একটা বড় অংশ মাছ বা মুরগির শরীরে জমা হতে থাকে। এমনকি ডিমেও জমা হয়। ওই মাছ, মুরগি বা ডিম খেলে মানুষের শরীরে ক্রোমিয়াম প্রবেশ করে। মলমূত্রের মাধ্যমে সবটুকু বের হতে না পেরে শরীরে জমা হতে থাকে এবং নানা রোগ সৃষ্টি করে। যেমন, টিউমার, পাকস্থলী/ক্ষুদ্রান্ত্র আলসার, পুরুষত্বহীনতা, অকাল প্রসব, বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগ। এক্ষেত্রে শিশু ও সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি অত্যন্ত বেশি।

সর্বশেষ খবর