বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা
টেস্টে ফেল করেও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ

উদ্বেগে অভিভাবক-শিক্ষাবিদ

ক্লাসে ৭০ শতাংশ উপস্থিত থাকলে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করেও চূড়ান্ত পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারবে- শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা এমন পরিপত্রে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। সন্তানদের পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলার আশঙ্কাও করছেন তারা। শিক্ষাবিদরা বলছেন, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য এমন নিয়ম হলে তা মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু স্থায়ীভাবে এ নিয়ম কার্যকর থাকলে এটি হবে প্রহসন। এ নিয়মে গ্রামের স্কুল-কলেজগুলোয় বেশি প্রভাব পড়বে বলেও তারা জানিয়েছেন। অনেকে বলেছেন, এমনটা হলে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাপ প্রয়োগ করে উপস্থিতির হার বাড়িয়ে নেওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ক্লাসে উপস্থিত থাকলে শিক্ষার্থীদের পাস করতে সমস্যা হবে না। শিক্ষকরা তাদের সেভাবেই তৈরি করবেন।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের হরতালে দেশ অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস-পরীক্ষায় সময়মতো অংশ নিতে পারছে না। আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষাকে উপলক্ষ করে যদি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমন পরিপত্র জারি করে তবে তা সময়োপযোগী। কিন্তু যদি এ নিয়ম সব সময়ের জন্য বহাল থাকে তবে তা হবে প্রহসন। টেস্ট পরীক্ষা দেওয়া আর না দেওয়ার মধ্যে কোনো তফাত থাকবে না।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত এ পরিপত্রে কারণ হিসেবে বিদ্যালয়গুলো শতভাগ পাস কিংবা ভালো ফলাফল দেখানোর জন্য নির্বাচনী পরীক্ষায় এক বা একাধিক বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়া, পরীক্ষার্থী ছাঁটাই করা, বিভিন্ন দুর্ঘটনা, দুর্যোগে অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারাকে উল্লেখ করলেও অভিভাবকরা বলছেন অন্য কথা। গতকাল ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে দুই অভিভাবকের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তারা অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবিমুখ করে তুলবে এমন নিয়ম। ছাত্রছাত্রীরা এমনিতেই পড়াশোনা করতে চায় না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমন ঘোষণায় ছেলেমেয়েরা পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। 'টেস্ট পরীক্ষায় পাস না করলে ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়া যাবে না'- এমন নিয়মে তারা আগে চাপে ছিল। কিন্তু এখন এমনটা আর হবে না। মাইলস্টোন কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষ বিজ্ঞান শাখার ছাত্রী রীতু রানী দাস বলেন, এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়ায় ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাবে। কারণ, তাদের আর এমন ভয় থাকবে না যে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করলে চূড়ান্ত পরীক্ষা দেওয়া যাবে না। কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, শহরের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের তুলনায় গ্রামের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কম সচেতন। সেখানে স্কুলে যাওয়ার হারও কম।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর