শনিবার, ৭ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা
চট্টগ্রামে জঙ্গি তৎপরতা

নজরদারিতে অর্ধশতাধিক মাদ্রাসা

কয়েক দিনের ব্যবধানে তিন জঙ্গি আস্তানা সন্ধানের পর নড়েচড়ে বসেছে চট্টগ্রামের পুলিশ প্রশাসন। তৎপর হওয়া জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম ঠেকাতে জেলার অর্ধশতাধিক মাদ্রাসা নজরদারিতে আনা হয়েছে। পাশাপাশি পাহাড়ি এলাকায় গোয়েন্দা ও পুলিশি তৎপরতা বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পুলিশি ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোর কথা স্বীকার করে জেলা বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাঈমুল হাছান বলেন, 'জঙ্গি মদদে অভিযুক্ত মাদ্রাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর পুলিশি ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে'। হাটহাজারী থানার ওসি ইসমাইল হোসেন ও রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি হুমায়ন কবির এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেয়েছেন জানিয়ে বলেন, 'চিহ্নিত এলাকায় পুলিশি তৎপরতা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিগত সময়ের প্রশিক্ষিত জঙ্গিদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে'। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনিয়া, পটিয়া, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়াসহ জেলার অর্ধশতাধিক কওমি মাদ্রাসা নজরদারিতে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পাহাড়ি ও কম জন চলাচল হয় এমন এলাকায় গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়াতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া তালেবানি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গি, জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের সময় চট্টগ্রামে জঙ্গি তৎপরতা শুরু হয়। একসময় তা গুরুতর আকার ধারণ করে। হরকাতুল জিহাদ, জেএমবি, তানজিমসহ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনের অভয়ারণ্য হয়ে ওঠে চট্টগ্রাম। মাঝখানে কয়েক বছর চট্টগ্রামে জঙ্গি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি ফের মাথাচাড়া দিয়েছে।

২৮ ফেব্রুয়ারি নগরীর হালিশহর থেকে বিপুল পরিমাণ বোমা ও তৈরির সরঞ্জামসহ চার জঙ্গিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ২১ ফেব্রুয়ারি র‌্যাব বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প আবিষ্কার করে। অভিযানে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদসহ পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯ ফেব্রুয়ারি হাটহাজারী উপজেলার আলীপুরের এস কে সাফিনা ভবনের চতুর্থ তলায় আল মাদরাসাতুল আবু বকর (রা.) থেকে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় ১২ জঙ্গিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এর আগে ১৯৯৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পাইনখালীর গহিন জঙ্গলে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় হরকাতুল জিহাদের ৪১ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। ২০০৪ সালের ১ জুন হাটহাজারীর দুর্গম পাহাড়ি এলাকার মুলাতলী থেকে কাঠের ডামি, বন্দুক, আর্মি শু, তাঁবু ও রশি উদ্ধার করে পুলিশ। এর সপ্তাহখানেক পর পুলিশ রাঙ্গুনিয়ার কোদালায় জঙ্গি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প উদঘাটন ও প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত বেশকিছু সরঞ্জাম উদ্ধার করে। ২০১০ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাউজান ও হাটহাজারীতে বোমা ও গ্রেনেড তৈরির সরঞ্জামসহ ছয় জঙ্গিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

 

সর্বশেষ খবর