শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

সিলেটের গণকবরে গো-চারণ ভূমির সাইনবোর্ড!

সিলেটের গণকবরে গো-চারণ ভূমির সাইনবোর্ড!

ছবি: নাজমুল কবীর পাভেল

সিলেট নগরীর আলুরতল এলাকা। টিলার উপর গণকবর। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সৈনিকদের সারিবদ্ধ কবর। এই গণকবরের ঠিক সামনে স্থাপিত সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে 'গো-চারণ ভূমি। জেলা দুগ্ধ খামার, সিলেট।’ গণকবরের ঠিক সামনে গো-চারণ ভূমির সাইনবোর্ড টানানোর ঘটনায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সিলেটের মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে। এটি শহীদদের প্রতি অপমান বলেও মন্তব্য করেছেন তারা। 

জানা যায়, ১৯৭১ সালে ১৪ ডিসেম্বর বিজয়ের ঠিক প্রাক্কালে সিলেটের বালুচর আলুরতল এলাকায় পাক বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘বি’ ও ‘ডি’ কোম্পানীর বেশ ক’জন সৈনিক। দীর্ঘদিন অবহেলায় অরক্ষিতভাবে পড়েছিলো এই গণকবর। 

২০১৩ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতায় সেনাবাহিনী আলুরতল এলাকার গণকবর সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়। ওই এলাকায় বনবিভাগ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, এমসি কলেজ ও জেলা দুগ্ধ খামারের ভূমিতে থাকা গণকবরগুলো চিহ্নিত করে পাকা করা হয়। নির্মাণ করা হয় স্মৃতিসৌধ। 

প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বর স্থানীয় অনেকে ও পাশ্ববর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরা এসব সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। 

জেলা দুগ্ধ খামার সূত্রে জানা যায়, গণকবর হিসেবে চিহ্নিত করে দুগ্ধ খামারের যে জমিতে সমাধিসৌধ গড়ে তোলা হয়েছে সেই জমি দীর্ঘদিন ধরেই খামারের গো-চারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। খামারের গরুর জন্য এই জমিতে ঘাসের চাষও করা হয়। তবে সমাধিসৌধের ঠিক সামনেই ‘গোচারণ ভূমি’ সাইনবোর্ড অসাবধানতাবশত টানানো হয়েছে। 

এ ব্যাপারে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল বলেন, গণকবরের সামনে গো-চারণ ভুমি সাইনবোর্ড টানানো কেবল শহীদদের প্রতি অবজ্ঞা নয়, এ আচরণ ধৃষ্টতারই শামিল। যাদের জীবনের বিনিময়ে আমরা এই দেশটা পেয়েছি তাদের যদি সম্মান জানাতে না পারি তাহলে আমরা অকৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে পরিচিত হব। জাতি হিসেবেও আমরা কখনো সম্মানের আসনে পৌঁছতে পারবো না।   

এ ব্যাপারে সিলেট জেলা দুগ্ধ খামারের সহকারী পরিচালক ডা. ইসহাক আলী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ভুলবশত গণকবরের সামনে গো-চারণ ভূমির সাইনবোর্ডটি লাগানো হয়েছে। এটি ঠিক হয়নি। সাইনবোর্ডটি সরানোর ব্যবস্থা করা হবে।

সর্বশেষ খবর