শনিবার, ২৮ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

আসছে তিন লাখ কোটি টাকার বাজেট

আসছে তিন লাখ কোটি টাকার বাজেট

আবারও বিশাল আকারের বাজেট দিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার। যদিও রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সম্পদের সংকটের কারণে চলতি বাজেট বাস্তবায়ন বাধার মুখে পড়েছে। জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাত্র ৩৮ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। তবুও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট তৈরির কাজ শুরু করেছে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এবারের বাজেটের সম্ভাব্য আকার হতে পারে ২ লাখ ৯১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এডিপির আকার হতে পারে ৯০ হাজার কোটি টাকার মতো। অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে এডিপির আকার ৮০ হাজার ৩১৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা। যদিও সংশোধিত বাজেটের জন্য এডিপির আকার ৭৫ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনার অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী বাজেটে আকার ও সামষ্টিক অর্থনীতির চলমান সংকট সমাধানে করণীয় নির্ধারণে চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে আর্থিক মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল এবং জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সে বৈঠকেই বাজেটে সম্ভাব্য আকার এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নির্ধারণ করা হতে পারে।

সূত্র জানায়, আগামী বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ধরা হতে পারে ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। চলতি বাজেটে এ আকার ধরা হয়েছে ১ লাখ ৪৯ হাজার কোটি টাকা। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে রাজস্ব আদায়ে এখনো ঘাটতি রয়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। চলতি বাজেটের মতোই ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুৎ-জ্বালানি, অবকাঠামো নির্মাণ, তথ্যপ্রযুক্তি, যোগাযোগ ও কৃষি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সম্পদের সীমাবদ্ধতা, রাজস্ব আদায়ে পিছিয়ে পড়া ও বৈদেশিক সাহায্যের হার কমে যাওয়ায় ২০১৪-১৫ অর্থবছর শেষে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ বেড়ে ৭৭ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়াতে পারে, যা মোট জিডিপির ৫ শতাংশ। অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত অবশ্য এটাকে ৬১ হাজার কোটি টাকায় ধরে রাখার অঙ্গীকার করেছেন। ফলে আগামী বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ৮০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি চলে যেতে পারে। বিশাল আকারের এ ঘাটতি দেশের ব্যাংকব্যবস্থা বা অভ্যন্তরীণ অন্য কোনো উৎস এবং বৈদেশিক ঋণ বা সহায়তা থেকে মেটাতে হবে সরকারকে।

উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে আগামী বছর মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ধরা হতে পারে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি বাজেটে এটা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। অবশ্য অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের মতো অর্জিত হতে পারে বলে ইতিমধ্যে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা পূর্বাভাস দিয়েছে। আর নিম্ন ও মধ্য বিত্তদের স্বস্তি দিতে এবার মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৭ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে সরকার। এজন্য অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়িয়ে বছরজুড়ে পণ্যদ্রব্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে চায় সরকার। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি উভয় খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পরিকল্পনাও থাকছে নতুন বাজেটে।

 

 

সর্বশেষ খবর