শনিবার, ২৮ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

গণকবর না গোচারণ ভূমি!

গণকবর না গোচারণ ভূমি!

সিলেট নগরীর আলুরতল এলাকায় টিলার ওপর গণকবর। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সৈনিকদের সারিবদ্ধ কবর। এই গণকবরের ঠিক সামনে স্থাপিত সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে 'গোচারণ ভূমি। জেলা দুগ্ধ খামার, সিলেট।' গণকবরের ঠিক সামনে গোচারণ ভূমির সাইনবোর্ড টানানোর ঘটনায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সিলেটের মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে। এটি শহীদদের প্রতি অপমান বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।

জানা যায়, ১৯৭১ সালে ১৪ ডিসেম্বর বিজয়ের ঠিক প্রাক্কালে সিলেটের বালুচর আলুরতল এলাকায় পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের 'বি' ও 'ডি' কোম্পানির বেশ কয়েকজন সৈনিক। দীর্ঘদিন অবহেলায় অরক্ষিতভাবে পড়েছিা এই গণকবর। ২০১৩ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতায় সেনাবাহিনী আলুরতল এলাকার গণকবর সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়। ওই এলাকায় বনবিভাগ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, যুব উন্নয়ন অধিদফতর, এমসি কলেজ ও জেলা দুগ্ধ খামারের ভূমিতে থাকা গণকবরগুলো চিহ্নিত করে পাকা করা হয়। নির্মাণ করা হয় স্মৃতিসৌধ। প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর স্থানীয় অনেকে ও পার্শ্ববর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরা এসব সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

জেলা দুগ্ধ খামার সূত্রে জানা যায়, গণকবর হিসেবে চিহ্নিত করে দুগ্ধ খামারের যে জমিতে সমাধিসৌধ গড়ে তোলা হয়েছে সেই জমি দীর্ঘদিন ধরেই খামারের গোচারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। খামারের গরুর জন্য এই জমিতে ঘাসের চাষও করা হয়। তবে সমাধিসৌধের ঠিক সামনেই 'গোচারণ ভূমি' সাইনবোর্ড অসাবধানতাবশত টানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল বলেন, গণকবরের সামনে গোচারণ ভূমি সাইনবোর্ড টানানো কেবল শহীদদের প্রতি অবজ্ঞা নয়, এ আচরণ ধৃষ্টতারই শামিল।

যাদের জীবনের বিনিময়ে আমরা এই দেশটা পেয়েছি তাদের যদি সম্মান জানাতে না পারি তাহলে আমরা অকৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে পরিচিত হব। জাতি হিসেবেও আমরা কখনো সম্মানের আসনে পৌঁছাতে পারব না।

এ ব্যাপারে সিলেট জেলা দুগ্ধ খামারের সহকারী পরিচালক ডা. ইসহাক আলী বলেন, ভুলবশত গণকবরের সামনে গোচারণ ভূমির সাইনবোর্ডটি লাগানো হয়েছে। এটি ঠিক হয়নি। সাইনবোর্ডটি সরানোর ব্যবস্থা করা হবে।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর