রবিবার, ২৯ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা

রেলের জমি হস্তান্তরের নামে অবৈধ লেনদেন

রেলের জমি হস্তান্তরের নামে অবৈধ লেনদেন

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাদারপুর এলাকার নওশাদ দীর্ঘদিন ধরে রেলের জমি দখল করে ছিলেন। সেই জমি তিনি ইব্রাহিমের কাছে বিক্রি করে অন্যত্র চলে যান। সাগুয়ান গ্রামের সাইদুর রহমান তার দখলে থাকা ১০ কাঠা জমি বিক্রি করেছেন মজিবুর রহমান ও গোলেনুরের কাছে। এভাবে পশ্চিমাঞ্চল রেলের জমি বিক্রি করে দিচ্ছেন দখলদাররা। মালিকানা না থাকায় ১৫০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে এসব জমি বিক্রি হচ্ছে। এভাবে বছরে কয়েক কোটি টাকার অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে হাতবদল হচ্ছে জমির মালিকানা।

বৈধ মালিকানা না থাকায় প্রকাশ্যে ও গোপনে এভাবে জমির মালিকানা হস্তান্তর চললেও রেলের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। জমির দখল নিয়ে মাঝে মাঝে মারামারির ঘটনাও ঘটছে। আর দখল স্বত্ব বিক্রির সঙ্গে জড়িয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্র জানায়, ১৯৬৩ সালে আমনূরা-গোদাগাড়ী রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১৯৬৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে রেলপথ বন্ধ ঘোষণা করে। এর পর থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকায় রেলের ৭১৬ দশমিক ৮৩ একর জমি রেল কর্তৃপক্ষের কাজে লাগেনি। এ সুযোগে সেখানে গড়ে উঠতে শুরু করে ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা। ২০০৪ সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ রেলওয়ের এক সভায় আমনূরা-গোদাগাড়ী পরিত্যক্ত রেলওয়ে সেকশনের ৭১৬ দশমিক ৮৩ একর জমির মধ্যে রাজশাহী জেলা প্রশাসককে ৭০২ দশমিক ৫০ একর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসককে ১৪ দশমিক ৩৩ একর জমি হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় জেলা প্রশাসকরা ওই জমি বাজার মূল্যে বিক্রি করে সেই টাকা রেলওয়ের অনুকূলে জমা দেবেন। কিন্তু ১১ বছরেও জেলা প্রশাসকরা সেই জমির দখল পাননি। মাদারপুর ডিমভাঙা এলাকার শামসুদ্দিন জানান, ১৯৬৬ সালের দিকে নদীর ভাঙনে টিকতে না পেরে তারা রেলের জমিতে বসতি গড়েন। সেই থেকে তারা সেখানে। তার মতো বহু পরিবার রেলের জমিতে বসতি গড়েছেন বলে তিনি জানান। রেলবাজার এলাকার এনামুল হক জানান, ৫৯ বছর আগে তারা এখানে বসতি গড়েন। তবে ওই সময় রেল কর্তৃপক্ষ তাদেরকে কৃষি জমি হিসেবে ইজারা দিয়েছিল। রাজস্ব নিত প্রতিবছর। পরবর্তীতে রেল কর্তৃপক্ষ প্রতি বর্গফুট হিসেবে জমির ইজারা মূল্য আদায় করত।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর