সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৫ ০০:০০ টা
সংবাদ সম্মেলনে খসরু

চট্টগ্রাম নগরী এখন বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আখড়া

চট্টগ্রাম নগরী এখন বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আখড়া

চট্টগ্রাম নগরী বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, এসব সন্ত্রাসী কেন্দ্র দখলে এনে জালভোট প্রয়োগ ও ত্রাস সৃষ্টি করে সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য মাঠে নেমেছে।
আজ সোমবার দুপুরে নগরীর মেহেদীবাগের নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান।

আমীর খসরু বলেন, ‘২৫ এপ্রিল রাত ১২টার পর থেকে বহিরাগতদের এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হলেও সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে বিপুল সংখ্যক বহিরাগত সন্ত্রাসী এখনো চট্টগ্রামে অবস্থা করছে। এতদিন বিভিন্ন হোটেলে তারা অবস্থান করলেও সোমবার থেকে তারা মাঠে নেমেছে।’
সরকার দলীয় মন্ত্রী, উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা নগরীর বিভিন্ন হোটেল, সরকারি-বেসরকারি রেস্ট হাউসে অবস্থান নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে

তিনি বলেন, ‘এরইমধ্যে কয়েক হাজার বহিরাগত সন্ত্রাসী বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে চলাফেরা শুরু করেছে। দফায় দফায় অভিযোগ দেওয়ার পরও নির্বাচন কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম শহর এখন সন্ত্রাসীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।’  

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের পাশ্ববর্তী জেলাগুলোর বিভিন্ন এলাকা থেকে দলীয় ক্যাডারদের চট্টগ্রাম শহরে আনা হয়েছে। ফেনীর নামকরা একজন সন্ত্রাসীর তত্ত্বাবধানে কয়েক হাজার দলীয় ক্যাডার ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে এসে অবস্থান করছে। পতেঙ্গা এলাকায় সরকারদলীয় এক এমপির তত্ত্বাবধানে বিজিএমইএর রেস্ট হাউজে এসব সন্ত্রাসী অবস্থান করছে। বিভিন্ন এলাকায় তারা মনজুর আলমের এজেন্টদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। এসব বিষয় ইসি ও পুলিশকে জানিয়েও কিছু হচ্ছে না। এ অবস্থায় সাধারণ ভোটাররা কিভাবে ভোট দিতে যাবে?’

গণমাধ্যমের সহায়তা চেয়ে আমীর খসরু বলেন, ‘আপনারা সরেজমিন এসব বিষয়ে রিপোর্ট করে ভোটের পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করুন। চিটাগাং ক্লাবসহ বিভিন্ন হোটেল ও সরকারি-বেসরকারি রেস্টহাউসে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ তোদেরকে গিয়ে প্রশ্ন করুন, কেন নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মানছেন না।’ তবে এসব পরিস্থিতির মধ্যেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন চালিয়ে যাবেন জানিয়ে মনজুর আলমের প্রধান এই নির্বচিনী এজেন্ট বলেন, ‘তিন সিটি নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষ দেখতে পায়Ñ তারা ভোটাধিকার ফিরে পাবে কিনা।’

সংবাদ সম্মেলনে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘নির্বাচনের নামে তামাশা হচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে মনজুর আলম ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ ভোট পাবেন। তা জেনে বহিরাগতদের এনে সকাল থেকে জাল ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা  করা হচ্ছে। আমাদের এজেন্টরা যাতে নির্বাচনে উপস্থিত না থাকে তার জন্য বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয়া হচ্ছে। পুলিশও সিভিল ড্রেসে গিয়ে নেতাকর্মীদের হুমকি দিচ্ছে ভোটের দিন এলাকায় না থাকতে।’

তিনি আরো বলেন, ‘মেডিকেল কলেজ এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী ক্যাম্প ভেঙ্গে দিচ্ছে। পুলিশের সহায়তায় তারা মনজুর বিরুদ্ধে রঙিন পোস্টাল লাগিয়েছে। তারা র‌্যাব পুলিশ বিজিবি নিয়ে মাঠে নেমেছে। গত রোববার রাতে ফেনী থেকে এসেছে ৩শ সন্ত্রাসী। রেল ক্রসিং এলাকায় তারা পেপার বিছিয়ে রাত যাপন করেছে। পলিটেকনিক এলাকায় ৫জন সন্ত্রাসী অস্ত্র নিয়ে পুলিশের সামনে চলাফেরা করছে। জোর করে আমাদের এজেন্টদের কাছ থেকে ফরম ছিনিয়ে নিচ্ছে। এসব পুলিশকে জানানোর পরও কিছু হচ্ছে না।’ নির্বাচনের নামে সরকার তামাশা করার প্রচেষ্টা করছে অভিযোগ করেছেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত মনজুর আলমের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল নোমান।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি এম এ আজিজ, উত্তরজেলা বিএনপি নেতা আবু আহমেদ হাসনাত, মীর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নুরুল আমীন প্রমুখ।
 

 

বিডি-প্রতিদিন/ ২৭ এপ্রিল, ২০১৫/ রশিদা

সর্বশেষ খবর