সোমবার, ৪ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

সাত বছর ধরে হেলে আছে রাসিক কর্তার বহুতল ভবন

সাত বছর ধরে হেলে আছে রাসিক কর্তার বহুতল ভবন

রাজশাহী মহানগরীতে সাত বছর আগে রাসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তার বহুতল ভবনটি হেলে পড়ে। পাশের আরেকটি ভবনের সঙ্গে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও এখনো তা অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। রাসিকের গঠন করে দেওয়া টেকনিক্যাল কমিটি ভবনটিকে ঝুঁকিমুক্ত করার নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ভবনটি সংরক্ষণে এর আগে নর্দমা নির্মাণ কাজও বন্ধ রাখা হয়েছিল। রাসিকের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক জানান, রাসিক থেকে ভবনটি ঝুঁকিমুক্ত করতে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। পরামর্শক কমিটি তাদের সেই পরামর্শও দিয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বার বার সময় নিয়ে মালিক পক্ষ ভবনটি সেভাবে রেখে দিয়েছে। ওই ভবনের আশপাশের মানুষ ঝুঁকিতে আছেন বলেও জানান তিনি।

২০০৮ সালের ৫ জুন রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহীতে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ১ মাত্রার এই ভূমিকম্পে নগরীর সাহেব বাজারে অবস্থিত রাসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুনের মালিকানাধীন ছয় তলা ভবন হাজী ছাত্রাবাসটি পাশের বহুতল ভবন রিভারভিউ ছাত্রাবাসের ওপর হেলে পড়ে। রাসিক সূত্র জানায়, ভবন হেলে পড়ার পর রাসিকের পক্ষ থেকে রুয়েট শিক্ষক ড. শেখ নিজাম উদ্দিনকে প্রধান করে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির আরেক সদস্য রাসিক নির্বাহী প্রকৌশলী খায়রুল বাশার সে সময় জানিয়েছিলেন, টেকনিক্যাল কমিটি সরেজমিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ভবনের মালিককে চিঠি দেয়। এতে তারা ভবনটিকে ঝুঁকিমুক্ত করতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে বলেন। কয়েক মাস পর ভবনটির মালিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পরামর্শের দলিলপত্রসহ টেকনিক্যাল কমিটিকে চিঠি দিয়ে জানান, ভবনটি না ভেঙে মেরামতের মাধ্যমে ঝুঁকিমুক্ত করা সম্ভব। এই কাজের জন্য তিনি ২০০৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চান। কিন্তু সেই সময় পেরিয়ে গেলেও ভবনটি ঝুঁকিমুক্ত করা হয়নি। ২০১০ সালে ওই ভবনের সামনে দিয়ে মাঝারি শহর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৫ ফুট চওড়া একটি নর্দমা নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রায় ৫০০ মিটার দীর্ঘ ড্রেনটি নির্মাণের জন্য শ্রমিকরা ওই বছরের ৭ আগস্ট মাটি খননের কাজ শুরু করে। কিন্তু হেলে পড়া ভবনের মালিক এ নিয়ে আপত্তি জানালে আবার সেই জায়গাটি ভরাট করে দিয়ে কাজ বন্ধ রাখা হয়। রিভারভিউ ছাত্রাবাসের মালিক জিল্লুর রহমান জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা এই ভবনটিকে ঝুঁকিমুক্ত করার দাবি জানিয়ে এলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। নর্দমা নির্মাণের জন্য মাটি খুঁড়তে লাগলে একপর্যায়ে হেলে পড়া ভবনটি আরও ঝুঁকে পড়ে এবং নিচ তলার দেয়ালে ফাটল দেখা দেয়। এ অবস্থায় ভবনের মালিক রাসিক কর্মকর্তা নর্দমা নির্মাণ বন্ধ করে দেন। জিল্লুর রহমান বলেন, 'হেলে পড়া ভবনটির জন্য আমরা সবসময় আতঙ্কে থাকছি, কখন না জানি দুর্ঘটনা ঘটে যায়। সাত বছর ধরে কোন যুক্তিতে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রাখা হয়েছে তা বুঝতে পারছি না।'

 

সর্বশেষ খবর