রবিবার, ২৪ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা
মানব পাচার (৩)

দালালের হাত ধরে সিন্ডিকেট

দালালের হাত ধরে সিন্ডিকেট

'দালালচক্রের হাত ধরে সিন্ডিকেট' নেটওয়ার্কে চলছে মানব পাচার। দালালরা প্রথমে নানা কৌশলে অসহায় ও গরিব মানুষকে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করে। তারপর তাদের তুলে দেয় প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণাধীন পাচার সিন্ডিকেটের হাতে। মানব পাচারের বিষয়ে সিএমপির অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর সিএমপির হেডকোয়ার্টারে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (স্পেশাল ক্রাইম অ্যান্ড প্রসিকিউশন) বরাবর 'অবৈধ পথে মানব পাচার ও টাকা পাচার বিষয়ক' একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন (স্মারক ১১১৩) জমা দেওয়া হয়। তাতে এসব তথ্য রয়েছে। চট্টগ্রামের অ্যাডিশনাল ডিআইজি (ক্রাইম) মাহবুবুর রহমান এ ব্যাপারে জানান, এই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের সূত্র ধরেই এখন র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব বাহিনীর সমন্বয়ে জল ও স্থলের সব পয়েন্টে ধারাবাহিক অভিযান চালানো হচ্ছে।

সিএমপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাচারকাজে মূলত তিনটি চক্র রয়েছে। এর একটি মাঠ পর্যায়ের দালালচক্র, এরপর সিন্ডিকেটের এজেন্ট চক্র এবং শীর্ষে আছে প্রভাবশালী মহল নিয়ন্ত্রিত সিন্ডিকেট। পাচারকাজে জড়িত মাঠ পর্যায়ের দালালরা প্রথমেই উদ্বুদ্ধ করা লোকদের কাছ থেকে কোনো টাকা দাবি করেন না। বরং তারা বলেন, মালয়েশিয়ায় যেতে কোনো টাকা বা ভিসা লাগে না। সে দেশে পৌঁছার পর টাকা দিলেই চলে। এ উদ্বুদ্ধ করেন নিয়োগকৃত মাঠ পর্যায়ের দালালরা। বিনিময়ে তারা এজেন্টদের কাছ থেকে পান নূ্যনতম ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা। মাঠের দালালরা নানা কৌশলে কল্পকাহিনী শুনিয়ে লোক সংগ্রহ করেন। তারপর তাদের সেন্ট মার্টিনের অদূরে অপেক্ষমাণ ট্রলারে উঠিয়ে দেন। এজেন্টরা তাদের চাহিদা অনুযায়ী লোক সংগ্রহ করে দেওয়ার জন্য মাঠ পর্যায়ে এসব দালাল নিয়োগ করে। গ্রামে ও শহরে এসব দালাল কাজ করেন। তারা তাদের সংগ্রহ করা লোকদের প্রথমে একটি স্থানে জড় করেন। তারপর সেখান থেকে ২০-৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে মূল এজেন্টদের কাছে হস্তান্তর করেন। মূল এজেন্টরা সংগ্রহকৃত যাত্রীদের বাহুতে অমোচনীয় কালি দিয়ে নামের আদ্যাক্ষর লিখে দেয়। এ পর্যায়ে স্থানান্তরকারী হিসেবে থাকেন মাছ ধরার নৌকা বা ট্রলারের মাঝি। তারা ২০-৩০ জনকে জেলেবেশে ট্রলারে নিয়ে যান গভীর সমুদ্রে অপেক্ষমাণ বড় জাহাজে।

 

সর্বশেষ খবর