মঙ্গলবার, ২৬ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা
মানব পাচার (শেষ)

সদর দফতরে ফাইলবন্দী সিএমপির আট সুপারিশ

সদর দফতরে ফাইলবন্দী সিএমপির আট সুপারিশ

মানব পাচার প্রতিরোধে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) আটটি সুপারিশ আলোর মুখ দেখেনি। পুলিশ সদর দফতরে ফাইলবন্দী। সিএমপি সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ ডিসেম্বর সিএমপির হেডকোয়ার্টার বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (স্পেশাল ক্রাইম অ্যান্ড প্রসিকিউশন) বরাবরে অবৈধ পথে মানব ও টাকা পাচার বিষয়ক একটি ‘অনুসন্ধানী প্রতিবেদন’ জমা দেয়। প্রতিবেদনে মানব পাচার প্রতিরোধে আটটি সুপারিশ করা হয়। চট্টগ্রামের এডিশনাল ডিআইজি (ক্রাইম) মাহবুবুর রহমান বলেন, পাচারকারীদের আইনের আওতায় আনা সময়ের দাবি। এ ব্যাপারে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করছে। তাছাড়া মানব পাচার রোধে চিহ্নিত এলাকাগুলোতে অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার সিদ্ধান্ত আছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করা হবে।
সিএমপির সুপারিশের মধ্যে মানব পাচার আইনে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর সঠিক ও নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে পাচারকারীদের পরিচয় উদ্ধারসহ পাচার মামলা তদারকির জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের মনিটরিং সেল গঠনের সুপারিশ করা হয়। মনিটরিং সেলে স্বরাষ্ট্র, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতিনিধি রাখার কথা বলা হয়েছে। পাচারের লেনদেনে জড়িত হুন্ডি ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনাসহ সমুদ্র উপকূলের ৮০ কিলোমিটার নৌপথে রোহিঙ্গাদের অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ওই অঞ্চলে পুলিশের নৌ ইউনিট স্থাপন করা। মানব পাচারের মামলাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেওয়া। বেশিরভাগ মানব পাচারের ঘটনা টেকনাফ থানার শাহপরী দ্বীপকে কেন্দ্র করে সংগঠিত হয়। তাই শাহপরীর দ্বীপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃশ্যমান উপস্থিতি নিশ্চিতসহ একটি পূর্ণাঙ্গ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র স্থাপন করা। মানব পাচার মামলাগুলোর বাদী (যেক্ষেত্রে ভিকটিম বাদী) ও সাক্ষীরা সাধারণত সমাজের দুর্বল শ্রেণির। বেশিরভাগ সময়ই তারা আদালতে সাক্ষী দেন না। এই স্বল্প সংখ্যক আসামির শাস্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে হাজিরার বিষয়ে জেলা বা মেট্রোপলিটন পর্যায়ে বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন। উপকূলীয় অঞ্চলে ওয়ার্ড ভিত্তিক মানব পাচার প্রতিরোধ কমিটি গঠনসহ মানব পাচারে জড়িত থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড বংশোদ্ভূত মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যদেরও আইনের আওতায় আনা জরুরি।
মানব পাচার প্রতিরোধে সচেতনতামূলক সংগঠন ইয়ুথ ভয়েসের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার তারেক আকবর খোন্দকার বলেন, অবৈধ অভিবাসন শাস্তিযোগ্য অপরাধ হলেও তা রোধ করা যাচ্ছে না। আইনে অবৈধ অভিবাসনের সঙ্গে যুক্তদের শাস্তির বিধান আছে। কিন্তু ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়ায় দুর্বলতা রয়েছে। তাছাড়া এই আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিচারের কথা বলা হলেও এর শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা সীমিত। ফলে অবৈধ অভিবাসনের সঙ্গে যুক্ত দালাল-অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর