শুক্রবার, ২৯ মে, ২০১৫ ০০:০০ টা

রেলে কোটি টাকার টেন্ডারবাজি

রেলে কোটি টাকার টেন্ডারবাজি

চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে রেলের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দফতরে দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও চিহ্নিত ঠিকাদারদের মধ্যে টেন্ডার সমঝোতার অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরেই একটি সিন্ডিকেটের কারণে প্রকৃত ঠিকাদাররা কোনো ধরনের টেন্ডারে অংশ নিতে পারছেন না বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। চিহ্নিত কর্মকর্তা-ঠিকাদাররা গোপন আঁতাত করে কৌশলে কাজ বাগিয়ে নেয়। এর ধারাবাহিকতায় গত বুধবারও পাহাড়তলীতে প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক (সিসিএস) দফতরের ‘টিআই ব্রেক ব্লক’ দরপত্রের ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার টেন্ডার ফরম জমা দিতে পারেননি অন্তত ১৫ ঠিকাদার। এ সময় সন্ত্রাসীরা মুজিব নামের একজন ঠিকাদারকে মারধরও করেছে। টেন্ডার ফরম জমা দিতে না পারা শ্রিযা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক ইকবাল আনোয়ার ফারুক অভিযোগ করে বলেন, প্রকৃত ব্যবসায়ীরা প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকসহ রেলের বিভিন্ন দফতরে ব্যবসা করতে পারেন না। একটি ঠিকাদারি চক্র সংশ্লিষ্ট দফতরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে আঁতাত করে কাজ বাগিয়ে নিচ্ছে। তিনি বলেন, সিসিএস দফতরের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক সেলিম আহমেদ খুবই ধূর্ত। যেদিন টেন্ডার হবে, সেদিন কৌশলে ঢাকায় চলে যান। তবে সবকিছুর নেপথ্যে কাজ করেন তিনি স্বয়ং। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরেই সেলিম ও সাপ্লাই অ্যাসোসিয়েশন নাম ভাঙিয়ে ঠিকাদার ফেরদৌস টেন্ডারবাজি করে আসছেন। আহত ঠিকাদার মুজিবুর রহমান বলেন, তিনি অপর একজনের একটি ফরম জমা দিতে যান। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুলিশের উপস্থিতিতেই হঠাৎ করে কয়েকজন সন্ত্রাসী তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। পূর্বাঞ্চলের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ও প্রকল্প পরিচালক সেলিম আহমেদ বলেন, টেন্ডারবাজি এখন নিত্যদিনের স্বাভাবিক ঘটনা। একটি টেন্ডার নিয়ে মারামারি হয়েছে বলে শুনেছি। টেন্ডাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। অভিযোগ অস্বীকার করে সাপ্লাইয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফেরদৌস হুদা বলেন, আমি তো ব্যবসা করি, মাস্তানি করি না। এখন ঢাকায় আছি, খবর নিয়ে বিস্তারিত জানাব। রেল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা মূল্যের ‘টিআই ব্রেক ব্লক’ ক্রয়ে দরপত্র আহ্বান করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের দফতর। টেন্ডার বিক্রির শেষ সময় পর্যন্ত ২৫টি দরপত্র বিক্রি হয়। গত বুধবার টেন্ডার জমার শেষ দিনে সকাল থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত মাত্র তিনটি দরপত্র জমা পড়ে। এ সময় বাকিরা টেন্ডার জমা দিতে গেলে ভয়ভীতি দেখানো হয়। পরে টেন্ডার জমাদানকে কেন্দ্র করে ঠিকাদার ফেরদৌস ও মহিউদ্দিন নামের অপর এক ব্যক্তির সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় মুজিব নামের একজন আহত হন। ঠিকাদার ফেরদৌস মেসার্স নূরে এলাহী নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিতে চেয়েছিলেন।

সর্বশেষ খবর