শনিবার, ৪ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

পে-স্কেল বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জে সরকার

টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড ও শিক্ষকদের গ্রেড নির্ধারণে দ্বিধাবিভক্তি

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন নিয়ে বিপাকে পড়েছে সরকার। একদিকে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বিলুপ্তির সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ক্ষোভ ও হতাশা, অন্যদিকে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির ঘোষণা না থাকায় এবং এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের নতুন বেতন কাঠামোর অধীনে না রাখায় দেখা দিয়েছে তীব্র অসন্তোষ। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গ্রেড নির্ধারণ নিয়েও শুরু হয়েছে জটিলতা। আর এসব সমস্যার সমাধান কী হতে পারে এ নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়েও দ্বিধাবিভক্তি দেখা দিয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়সহ দেশের সব সরকারি অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, মন্ত্রণালয়, অধিদফতর, পরিদফতর ও বিভাগের নিম্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বাতিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতারা গকতাল অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠকও করেন। বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র পে-স্কেলের দাবি জানিয়েছেন তারা। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বিলুপ্তির প্রস্তাবের ব্যাপারে তাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কেউ কেউ এর পক্ষে মত দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ এর বিপক্ষে। এক ধরনের হতাশাও প্রকাশ করেছেন নন-প্রমোটেড পদে কর্মরতরা। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড রাখা উচিত। অন্যথায় অনেকেই বঞ্চিত হবেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়ন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির জন্য সরকার প্রস্তাবিত নতুন বাজেটে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে। এর মধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা প্রথম বছর বেতন দিতেই চলে যাবে। আর পাঁচ হাজার কোটি টাকা এমপিওভুক্তির জন্য অপেক্ষমাণ সাড়ে আট হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যয় করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু এ নিয়েও বিপত্তি দেখা দিয়েছে। খোদ অর্থ মন্ত্রণালয় আপাতত কোনোভাবেই নতুন করে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি চায় না বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা যারা বেতন কাঠামো নিয়ে কাজ করছেন, তাদের মধ্যেও এ নিয়ে রয়েছে দ্বিধাবিভক্তি। কেউ কেউ চান সিলেকশন গ্রেড রাখা হোক, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বিশেষ গ্রেড দেওয়া হোক, টাইমস্কেল বহাল রাখা হোক। আবার কেউ কেউ এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এমনকি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যেও এ নিয়ে বিভক্ত মতামত রয়েছে। এ জন্য অর্থমন্ত্রী এ সমস্যার সমাধানে অর্থসচিব মাহাবুব আহমেদ ও ব্যাংকিং সচিব ড. এম আসলাম আলমসহ আরও কয়েকজন অতিরিক্ত সচিবকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নন-প্রমোটেড পদ ও ছোট অনেক পদ রয়েছে যেগুলোর জন্য টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড অবশ্যই থাকা উচিত। অন্যথায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত ও বঞ্চিত হবেন। এতে প্রশাসনে বৈষম্যের সৃষ্টি হবে।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর