রবিবার, ৫ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা
চট্টগ্রামের ঈদবাজার

জারদৌসি-কারচুপির কারিগরদের কাটছে নির্ঘুম রাত

জারদৌসি-কারচুপির কারিগরদের কাটছে নির্ঘুম রাত

দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদ উল ফিতর। দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে কর্ম ব্যস্ততাও। সুঁই-সুতা, স্প্রিং, চুমকি, পুঁতি, কুন্দন ব্যবহার করে শাড়ি, লেহেঙ্গা, কামিজ ও পাঞ্জাবিসহ ঈদের পোশাকে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বর্ণিল সব নকশা। কারোই যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। এ চিত্র চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বিহারী কলোনির জারদৌসি ও কারচুপির কারিগরদের কর্ম ব্যস্ততার।

বিহারী কলোনি ঘুরে দেখা যায়, ঈদকে সামনে রেখে চলছে ঘুমহীন কর্মযজ্ঞ। নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তৈরি করা হচ্ছে থ্রিপিস, শাড়ি, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, লেহেঙ্গা, বোরকা, কামিজসহ নানান ধরনের ঈদের পোশাক। তাতে তুলে আনছেন ঐতিহ্য আর বৈচিত্র্যের ছাপ। প্রত্যেক কারখানায় চলছে সকাল নয়টা থেকে সেহেরি পর্যন্ত পোশাক তৈরির যজ্ঞ। কারিগররা জানান, ডিজাইনের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয় মজুরি। একেকটি কাজের জন্য সর্বনিম্ন ৫শ’ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত মজুরি নেয়া হয়। এখানে প্রতিটি থ্রিপিসের জন্য মজুরি নেয়া হয় তিন হাজার টাকা, শাড়ি ১০ হাজার টাকা, লেহেঙ্গা ২০ হাজার টাকা।  সবচেয়ে কম মজুরিতে পাঞ্জাবির কাজে নেয়া হয় ৫০০ টাকায়। ডিজাইন ভেদে এসব কাজ করতে এক দিন থেকে বার দিন পর্যন্ত সময় লাগে। তুলনামূলক কম ডিজাইনের কাপড়গুলোতে সময় কম লাগলেও জটিল ডিজাইনের পোশাক ডেলিভারি দিতে সময় লাগে।

‘পাপ্পু বুটিকস হাউস’র সত্ত্বাধিকারী মো. খালিদ জাফর পাপ্পু বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাপড় ডেলিভারি দিতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। ঈদের কাজের চাপ সামলাতে বাড়তি লোক নিয়োগ দিতে হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, এক সময় বিহারী কলোনির প্রতিটা ঘরে চলতো কাপড়ে শৈল্পিক সব নকশা তৈরির ধুম। নামীদামী বিপনী বিতানগুলোর পোশাকের অর্ডারও ছিল তাদের দখলে। এখন আগের সেই জৌলস নেই। যন্ত্রে কাজ করা ভারতীয় ও চীনা সস্তা কাপড়ের পোশাকের দাপটে ছোট হয়ে গেছে বাজার। দেড়শতাধিকের কারখানার মধ্যে এখন টিকে আছে মাত্র ২০টির মতো কারখানা। জীবন ও জীবিকার তাগিদে কলোনির ছেলে-মেয়েরা এখন ঐতিহ্যবাহী এ হস্তশিল্প ছেড়ে ঝুঁকছেন গার্মেন্টেসের কাজে। এখানকার ব্যবসায়ীদের দাবিী, অচিরে এ ক্ষুদ্র শিল্পকে রক্ষার জন্য সরকার উদ্যোগ না নিয়ে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে এ শিল্প।
 

 

বিডি-প্রতিদিন/ ০৫ জুলাই, ২০১৫/ রশিদা

সর্বশেষ খবর