বুধবার, ২৯ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

খুলনা প্রিন্টিংয়ের ৭৬ এলসির তথ্য নেই এনবিআরে

তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ সুপ্রিমকোর্টের

ফ্রি স্টাইলে চলছে কাস্টমস প্রশাসন। বন্ড লাইসেন্সের মেয়াদোত্তীর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান পর পর ৭৬টি ঋণপত্র (এলসি) করে বন্ড ওয়্যারহাউসের শুল্কমুক্ত সুবিধায় পণ্য আমদানি করেছে। কী কী পণ্য আমদানি করা হয়েছে সে তথ্যে গোঁজামিল রেখেই তা খালাস করে নিয়ে গেছে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম ও বেনাপোল কাস্টম হাউসে ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে পণ্য ছাড়করণে বিল অব এন্ট্রি দাখিলও করেনি। এ ক্ষেত্রে কাস্টম কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছিল কি না তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। এমন প্রেক্ষাপটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বলেছে, ৭৬টি এলসির তথ্য তাদের কাছে নেই। তথ্য সংশ্লিষ্ট সূত্রের। কাস্টমস সূত্র জানায়, ওই ৭৬টি এলসিতে পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের বন্ড লাইসেন্স নবায়ন ছিল না। পরে নবায়ন করে পণ্য খালাস দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যাংক গ্যারান্টির বিপরীতে খালাস হয়েছে। বিষয়টি কাস্টমসে ব্যাপক ধূম্রজালের সৃষ্টি করেছে বলেও জানা গেছে। এ বিষয়ে ১৪ জুলাই সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের আদেশ পেয়ে ২০ জুলাই পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এনবিআর। এ ক্ষেত্রে ২৬ জুলাই পরবর্তী ৩০ কার্যদিবস সময় বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামানকে একটি পত্র দিয়েছেন এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (শুল্ক : রপ্তানি ও বন্ড) মুহাম্মদ ইমতিয়াজ হাসান। ওই পত্রে বলা হয়েছে, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের ৭৬টি এলসির মাধ্যমে আমদানি করা পণ্য বিল এব এন্ট্রি দাখিল ব্যতিরেকে ছাড়করণের বিষয়টি তদন্ত করার লক্ষ্যে এনবিআর তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটি ইতিমধ্যে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। আপিল বিভাগের আদেশে উল্লিখিত ৭৬টি এলসির কপি এবং মামলার আর্জির কপিও এনবিআরে নেই। চালানগুলো বেনাপোল কাস্টম হাউস ও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মাধ্যমে খালাস করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ দুটি কাস্টম হাউসের অবস্থান দেশের দুই প্রান্তে হওয়ায় তদন্তকাজ সময়সাপেক্ষ।

এ প্রসঙ্গে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ৭৬টি এলসির আমদানি ও ছাড়করণে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না তা তদন্ত করে এনবিআরকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।
এদিকে তদন্ত কমিটি গঠন সম্পর্কিত আরেকটি পত্রে এনবিআর বলেছে, আপিল বিভাগের আদেশ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড হাইকোর্ট বিভাগের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশবলে ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে বিল অব এন্ট্রি দাখিল না করেই পণ্য ছাড় করেছে। এ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কোনো কর্মকর্তার যোগসাজশ ছিল কি না তা শনাক্ত করতে আপিল বিভাগের নির্দেশনার আলোকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এনবিআর। প্রতিষ্ঠানটির শুল্ক বিভাগের সদস্য (বোর্ড প্রশাসন) ফিরোজ শাহ আলম এর আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব হলেন প্রথম সচিব (শুল্ক) মু. রইচ উদ্দিন খান। কমিটির অন্য তিন সদস্য হলেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক হোসাইন আহমেদ ও বেনাপোল কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার ফিরোজ উদ্দিন।
এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব মু. রইচ উদ্দিন খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এখনো তদন্ত শুরু হয়নি। তবে আদালত কী চান বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর