রবিবার, ৩ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামের ‘দুর্গ’ রক্ষা করতে নামছে বিএনপি-জামায়াত

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

নিজেদের দুর্গে এবার অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে নামছে বিএনপি-জামায়াত। কারণ চট্টগ্রামের দুর্গ হিসেবে পরিচিত সীতাকুণ্ডু, সাতকানিয়া এবং বাঁশখালীর পৌর নির্বাচনে তাদের মেয়র প্রার্থীদের পরাজয়ের পাশাপাশি কাউন্সিলরদের সিংহভাগই জামানত হারিয়েছেন। এই তিন পৌর এলাকার ৩৬ কাউন্সিলরের মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীরা মাত্র চারটি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছেন। পৌর নির্বাচনে এই ভরাডুবির পর নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে বিএনপি-জামায়াত।

উল্লেখ্য, সীতাকুণ্ডু, সাতকানিয়া এবং বাঁশখালীর প্রত্যেক পৌরসভায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীরা। সীতাকুণ্ডে ৯ সাধারণ

কাউন্সিলরের মধ্যে আটটি আওয়ামী লীগ সমর্থিত এবং এটিতে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তিন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে তিনটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা জয়ী হয়েছেন। সাতকানিয়ার ৯ সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সাতজন আওয়ামী লীগের এবং দুজন জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। তিন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে দুটিতে আওয়ামী লীগ এবং একটিতে বিএনপি সমর্থিত জয়ী হয়েছেন। বাঁশখালীর ৯ সাধারণ কাউন্সিলর এবং তিন সংরক্ষিত কাউন্সিলরের মধ্যে সবগুলোতেই আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা জয়ী হয়েছেন। প্রসঙ্গত, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে নাশকতা ও ধ্বংসযজ্ঞের স্বর্গ হয়ে উঠেছিল সীতাকুণ্ডু, সাতকানীয়া এবং বাঁশখালী। এসব উপজেলায় গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, সংখ্যালঘু-আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট, মন্দির ভাঙচুর, উপজেলা পরিষদ কার্যালয়-আদালত ভবনে অগ্নিসংযোগ, পুলিশের ওপর হামলাসহ অসংখ্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়। এ সময় শুধু সীতাকুণ্ডু উপজেলা এলাকায়ই ভাঙচুর করা হয় এক হাজারের ওপরে কাভার্ড ভ্যান, ট্রাক ও বাস। পোড়ানো হয় শয়ের ওপরে গাড়ি। এ উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে গেছে আড়াইশ কোটি টাকার ওপরে। জেলার সাতকানিয়া ও বাঁশখালী উপজেলায় ব্যাপক ধ্বংসাত্মকমূলক কার্যক্রমে মেতে উঠেছিল জামায়াত-শিবির। তারা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ব্যারিকেড দিয়ে টানা ছয় দিন সড়ক অবরোধ করে রেখেছিল। পর্যবেক্ষকদের মতে, এরই প্রভাব পড়ে পৌরসভা নির্বাচনে এবং ফল হিসেবে জামায়াত-বিএনপির ব্যাপক পরাজয় ঘটে। তবে জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াত এখন তাদের এই তিন দুর্গকে আবার আগের অবস্থানে নিয়ে যেতে চাইছে। এ বিষয়ে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, এবার নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। এ ধকল কাটিয়ে উঠতে মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হবে। পাশাপাশি সাংগঠনিক তত্পরতা বৃদ্ধি এবং সংগঠন গোছানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগও বসে নেই। তারা জয় ধরে রাখতে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বীর বাহাদুর এমপি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত সীতাকুণ্ডু, সাতকানিয়া এবং বাঁশখালীর পৌর নির্বাচনে জয়ী হওয়া আমাদের জন্য একটি অর্জন। জয়ের এ ধারা ধরে রাখতে ওই এলাকাগুলোতে সাংগঠনিক তত্পরতা আরও বৃদ্ধি করা হবে। সংগঠনকেও আরও ভালোভাবে গোছানো হবে।

সর্বশেষ খবর