মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

চাক্তাই খালের নাভিশ্বাস

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চাক্তাই খালের নাভিশ্বাস

ময়লা-আবর্জনা, ভরাট, দখল-বেদখলে বেহাল চট্টগ্রাম নগরীর প্রাণ হিসেবে খ্যাত চাক্তাই খাল। এর প্রশস্ততা ও গভীরতা দিন দিন কমছে। নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে অনেকটাই নির্ভরশীল খালটির প্রশস্ততা এর আগে গড়ে ৫০ ফুট থাকলেও এখন ৩০-৪০ ফুটে ঠেকেছে। এদিকে চাক্তাই খালের ৪৮ অবৈধ দখলদারকে চিহ্নিত করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। তারা খালের পাড়ে অবৈধভাবে তৈরি করেছেন দোকান, বাণিজ্যালয়, টয়লেটসহ নানা স্থাপনা। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নদীসংক্রান্ত টাস্কফোর্সের ২৬তম সভায় চট্টগ্রাম নগরীর চাক্তাইসহ অন্যান্য খাল উদ্ধারে সিদ্ধান্ত হয়। সে আলোকে সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে ১০ সদস্যের কমিটি সরেজমিন তদন্ত শেষে চাক্তাই খালের বাকলিয়া ও শুলকবহর মৌজায় ৪৮ অবৈধ দখলদারকে চিহ্নিত করে। সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল আলম বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক), বন্দর প্রতিনিধিসহ কমিটির সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করেছি। পরে চাক্তাই খাল ও খালের পাড়ে অবৈধ দখলদারদের ৪৮ জনের তালিকা জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দিয়েছি।

এ ব্যাপারে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’ বক্সিরহাট ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতা মুহাম্মদ জামাল হোসেন বলেন, চাক্তাই খালের মোহনা থেকে হামিদুল্লাহ বাজার পর্যন্ত ১ কিলোমিটার অতীতে কখনো বর্জ্য অপসারণ ও ড্রেজিং করা হয়নি। তা ছাড়া বহদ্দারহাট, চকবাজার, দেওয়ান বাজার, মিয়াখান নগর ব্রিজ পর্যন্ত খালে বিভিন্ন সময় মাটি খনন ও সংস্কারকাজ চললেও তা অপ্রতুল। তবে এখন দরকার চাক্তাই খাল ও এ খাল সংযুক্ত সব শাখা খালকে পানি চলাচলের উপযোগী করা। একই সঙ্গে অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে মুক্ত করা জরুরি। সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর সিংহভাগ এলাকার পানি নিষ্কাশন হয় চাক্তাই খাল দিয়ে। নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন অনেকটাই এ খালের ওপর নির্ভরশীল। অতীতে খালটির প্রশস্ততা গড়ে ৫০ ফুট থাকলেও এখন তা দখল-ভরাটে ৩০-৪০ ফুটে ঠেকেছে।

জানা যায়, চাক্তাই খালের গুরুত্ব বিবেচনায় ১৯৮৮ সালে পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ৫ কোটি ১১ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যয়ে খনন করা হয়। ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে দ্বিতীয় দফায় চাক্তাই খালের সংস্কার করা হয়। ওই সময় ১০ কোটি টাকা বরাদ্দের মধ্যে ৫ কোটি ৪৪ লাখ ৭০ হাজার ব্যয় হয় ভূমি অধিগ্রহণ এবং ৩ কোটি ৭৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা খালের দেয়াল নির্মাণ ও খননকাজে। পরে ২০০৩ সালে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে তৃতীয় দফায় খালের তলা ও পাশ পাকাকরণ কাজ করা হয়। এর পর থেকে প্রতি অর্থবছরে কোটি কোটি টাকার সংস্কারকাজ করা হলেও তার সুফল পাওয়া যায় না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর