বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

সরকারি সম্পত্তির নথি গায়েব

তিন বছর ধরে বন্ধ খাজনা আদায়

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

রাজশাহীর ভূমি অফিস থেকে গায়েব হয়ে গেছে ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদফতরের অধিগ্রহণ করা সম্পত্তির নথি। ১৯৫১-’৫২ সালে সরকার সম্পত্তিগুলো অধিগ্রহণ করে। ১৯৭৭ সালে সরকার সেই সম্পত্তি রিফিউজিদের মাঝে বরাদ্দ দেয়। ২০১৩ সাল পর্যন্ত বরাদ্দ পাওয়া সম্পত্তির অনুকূলে বসবাসকারীরা সরকারকে খাজনা দিয়েছেন। তবে দুই বছর ধরে ভূমি অফিস খাজনা নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। নগরীর বোয়ালিয়া থানা ভূমি অফিস থেকে ওই সম্পত্তির নথি গায়েব হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে।

বোয়ালিয়া থানা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলমগীর কবির জানান, নথির কিছু সমস্যা থাকার কারণে খাজনা নেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি জানান, সরকার যেভাবে বরাদ্দ দিয়েছিল, তাতে ২৫ বছরের আগে কেউ ভূমি বিক্রি বা হস্তান্তর না করার শর্ত ছিল। কিন্তু ওই এলাকা সেই শর্ত মানা হয়নি। এখন জরিপ কাজ চলছে। বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ করছে। সেই কাজ শেষ হলে পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

রাজশাহী ভূমি অফিসের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ১৯৫১-’৫২ সালে সরকার ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদফতরের নামে নগরীর শিরোইল মৌজার প্রায় ১০০ একর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করে। তবে ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদফতর সেখানে কোনো স্থাপনা গড়ে না তোলার সুযোগে সেখানে অনেকে বসতি গড়ে তোলেন। ১৯৭৭ সালে সরকার ২০০ রিফিউজি পরিবারের নামে সম্পত্তিগুলো প্লট আকারে বরাদ্দ দেয়। এরপর থেকে সেখানে ২০০ পরিবারের বসতি গড়ে ওঠে। বরাদ্দের অনুকূলে সরকারি নির্ধারিত খাজনাও পরিশোধ করেন বসবাসকারীরা। কিন্তু তিন বছর ধরে ওই পরিবারগুলোর কাছ থেকে খাজনা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ভূমি অফিস।

শিরোইল কলোনিতে বসবাসকারী হাফিজ আকবর আলী জানান, তারা দীর্ঘ সময় ধরে সেখানে বসবাস করছেন। গত বছর তারা জমির খাজনা দিয়েছেন। কিন্তু এ বছর খাজনা দিতে গেলে ভূমি অফিস তা নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। ভূমি অফিসের একটি সূত্র জানিয়েছে, বোয়ালিয়া থানা ভূমি অফিসে চুরি ও রহস্যজনক অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সে সময় থেকে ওই নথিগুলো গায়েব। ভূমি অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে সম্পত্তির নথি গায়েব করা হয়েছে। শিরোইল কলোনি এলাকায় এখনো বহু ফাঁকা জায়গা আছে। সেগুলো দখলে নিতে নথি গায়েবের ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।

সর্বশেষ খবর