বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে নতুন সংকট ৯০ লাখ বস্তা অবিক্রীত

বেড়েছে কাঁচা পাটের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনায় উৎপাদিত প্রায় ৯০ লাখ পাটের বস্তা অবিক্রীত থাকায় নতুন করে সংকটে পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সাতটি পাটকল। বাজারে পাটের বস্তার চাহিদা না থাকায় প্রতিটি পাটকলের উৎপাদন নেমে গেছে প্রায় শূন্যের কোঠায়। এর মধ্যে কাঁচা পাট রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আরেক দফা সংকটে পড়েছে পাটকলগুলো। সব ধরনের কাঁচা পাটের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে মণপ্রতি আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা। এর ফলে রপ্তানিকারকদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সরকারি পাটকলগুলো বাজার থেকে কাঁচা পাট কিনতে ব্যর্থ হবে। জানা যায়, দেশের পাটকলগুলোকে সচল করতে গত বছরের ৩ নভেম্বর থেকে চাল, ডাল, গম, চিনি, সার, ভুট্টা এই ছয় পণ্যের মোড়কীকরণে পাটের বস্তা বাধ্যতামূলক করা হয়। পাটকলগুলোতে পর্যাপ্ত পাট সরবরাহের সুযোগ দিতে ওই সময় থেকে সব ধরনের কাঁচা পাট রপ্তানি নিষিদ্ধ করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। শুরুতে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রিসেন্ট, ইস্টার্ন, দৌলতপুর, জেজেআই, খালিশপুর, প্লাটিনাম ও স্টার জুট মিলে প্রতিদিন ২ লাখ ৬৩ হাজার বস্তা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। কিন্তু উৎপাদিত বস্তা বিক্রি না হওয়ায় ধারাবাহিক কমে বস্তার উৎপাদন গত দুই দিনে ৬ হাজার ৩০০টিতে নেমেছে। এর মধ্যে ক্রিসেন্ট, ইস্টার্ন, জেজেআই ও খালিশপুর জুট মিলে গত ২৮ মার্চ থেকে বস্তা উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। বিজেএমসির উৎপাদন ব্যবস্থাপক শংকর ভুইয়া জানান, মিলগুলো এখন বস্তার বদলে সীমিত আকারে রপ্তানিযোগ্য ক্লথ, ব্যাগ ও ইয়ান (সুতা) উৎপাদন শুরু করেছে। জানা যায়, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোতে কাঁচা পাটের মজুদও কমে এসেছে। ক্রিসেন্ট, স্টার, প্লাটিনামের মতো বড় পাটকলগুলোতে ৫ থেকে ৯ দিনের মতো কাঁচা পাট মজুদ আছে। কিন্তু অর্থের অভাবে মিলগুলো কাঁচা পাট কিনতে পারছে না। সেই সঙ্গে ২৮ মার্চ থেকে কাঁচা পাটের রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর খুলনার মোকামে পাটের দাম বাড়ায় আরেক দফা সংকটের মুখে পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো। এ অবস্থায় পাটকল শ্রমিকরা পাট খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দসহ ৫ দফা দাবিতে গত সোমবার থেকে ২১ দিনের আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে। পাট ব্যবসায়ীরা জানান, পাট মোকামগুলোতে সব ধরনের কাঁচা পাটের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে মণপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মণপ্রতি তা ৫০০ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) একাধিক কর্মকর্তা জানান, কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধ থাকায় দীর্ঘদিনের মন্দা কাটিয়ে পাটশিল্প ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল।

সর্বশেষ খবর