শুক্রবার, ১৩ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

স্বাবলম্বী হওয়ার পথে ৫ শতাধিক বন্দী

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

স্বাবলম্বী হওয়ার পথে ৫ শতাধিক বন্দী

‘রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ’ এ স্লোগানকে পরিপূর্ণ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার পথে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের ৫ শতাধিক বন্দী। তারা মুক্তি পেয়ে নিজের কাজ নিজেই খুঁজে নিতে পারবেন। তারা বাঁশ-বেতের সামগ্রী, লুঙ্গি-গামছা-চাদর, পাটজাত পণ্য, বেকারিজাত খাদ্যপণ্য, রান্নার কাজ, ইলেক্ট্রিক কাজ, সেলাই ও লন্ড্রির কাজের ওপর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষিত হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে তারা অপরাধ মানসিকতার সংশোধন হয়ে কর্মক্ষম স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আসবে বলে কুমিল্লা কারা কর্তৃপক্ষের ধারণা।

কারা সূত্রে জানা যায়, ১৭৯২ সালে ৬৭ একর জায়গার ওপর কুমিল্লা জেলা কারাগারের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৬২ সালে এ কারাগারকে কেন্দ্রীয় কারাগারে রূপান্তর করা হয়। ১ হাজার ৭৪২ জন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এ কারাগারে গড়ে প্রতিদিন পুরুষ-মহিলাসহ আড়াই সহস্রাধিক হাজতি-কয়েদি অবস্থান করে থাকে। এসব বন্দীদের মধ্যে অদক্ষ মহিলা ও পুরুষ কয়েদিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এসব বন্দীরা কাঠ, বেত, বাঁশ, তাঁত, সুতা ও বিভিন্ন ধরনের উপকরণ দিয়ে তৈরি করছে ছোট-বড় মোড়া, চেয়ার, ছোট-বড় বাঁশ-বেতের ঝুড়ি, বাঁশের দোলনা, কলমদানীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। বন্দীদের হাতে তৈরি এসব পণ্যসামগ্রী কারাগারের চাহিদা মিটিয়ে জনসাধারণের কাছে বিক্রির জন্য কারাগারের প্রধান ফটকের পাশে রয়েছে বিক্রয় কেন্দ্র। খুচরা ও পাইকারি দরে দৃষ্টিনন্দন ও কারুকার্যখচিত এসব পণ্যসামগ্রী কিনতে প্রতিদিন ভিড় জমান বন্দীদের স্বজন ছাড়াও সাধারণ ক্রেতারা।

কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহানারা বেগম জানান, এখানে পুরুষ ও নারী কয়েদিরা সমানভাবে হাতের কাজে দক্ষ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে গিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজে পাবে। বন্দীদের কর্মমুখী করা ছাড়াও ‘সুস্থ দেহে সুন্দর মন’ বিকাশের জন্য এখানে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক, খেলাধুলাসহ বিনোদনমূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের। এ কারাগারে অশিক্ষিত বন্দীদের ধর্মীয় শিক্ষাসহ গণশিক্ষার কার্যক্রমও নিয়মিত চলছে।

সর্বশেষ খবর