রবিবার, ৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

সাইনবোর্ড সর্বস্ব ডায়াগনস্টিকে অভিযান, ৪ দালাল আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

রোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোনো যন্ত্রপাতি নেই, নেই ডাক্তার, প্যাথলোজিস্ট কিংবা টেকনিশিয়ান। আছে একটি সাইনবোর্ড, কয়েকজন দালাল আর ঝাড়ুুদার। সাইনবোর্ডে লেখা নোভা ডায়াগনস্টিক ল্যাব। লেখা রয়েছে ছয়জন চিকিৎসকের নাম। রোগী এলে ঝাড়ুুদার নিজেই এপ্রোন পরে বনে যান চিকিৎসক। শুধু একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিনের পর দিন প্রতারণা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে নোভা ডায়াগনস্টিক ল্যাবের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার রাতে নগরীর জর্ডন রোডে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে ঝাড়ুদারসহ চারজনকে আটক করে পুলিশ। এরা হলো সাগরদী ব্রাঞ্চ রোডের শাহিন ওরফে ঝাড়ুদার শাহিন, মধ্য রুপাতলীর রিপন, বাকেরগঞ্জের চুন্নু মৃধা এবং ভোলার রাজু। পরে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করা হলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কল্যাণ চৌধুরী শাহীনকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা এবং অপর তিন জনের মধ্যে একজনকে ৫ হাজার, একজনকে ২ হাজার এবং আরেক জনকে এক হাজার টাকার অর্থদণ্ড, অনাদায়ে একমাস করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানিয়েছে, নোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ৮ জন। এখানে কোনো চিকিৎসক বসেন না। দালালের মাধ্যমে রোগী এনে অন্য ডায়াগনস্টিক থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। এর পার্সেনটেজ দেওয়া হয় সেই চিকিৎসকদের। অভিযানের নেতৃত্বে থাকা কোতোয়ালি থানার এসআই সাইদুল ইসলাম জানান, গত শুক্রবার বিকালে বরগুনার মধ্য বামনা এলাকার শামীম হোসেন ও তার বোন রাশিদা বেগম চিকিৎসার উদ্দেশে বরিশাল আসেন। বিকাল ৫টার দিকে রুপাতলী বাসস্ট্যান্ডে নেমেই নোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল রাজুর খপ্পরে পড়েন। রাজু তার টেম্পোতে উঠিয়ে তাদের জর্ডন রোডের নোভা ডায়াগনস্টিকে নিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখে। এ সময় ঝাড়ুদার শাহিন এপ্রোন পরে নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দেন। দালালের খপ্পরে পড়েছেন বুঝতে পেরে রাশিদা মুঠোফোনে বিষয়টি মেয়ে জামাতাকে জানান। মেয়ের জামাতা কোতোয়ালি থানায় অবহিত করার পর পুলিশ তাত্ক্ষণিক অবরুদ্ধ দুই রোগীকে উদ্ধার এবং ৪ প্রতারককে আটক করে।

প্রতারকের খপ্পরে পড়া শামীম হোসেন বলেন, চিকিৎসক দেখানো ও পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ সব কিছু ৪ হাজার টাকার মধ্যে করিয়ে দেওয়ার চুক্তিতে তাদের নোভা ডায়াগনস্টিক ল্যাবে নিয়ে যায় দালাল রাজু। তাদের সেখানে নিয়ে একটি কক্ষে আটকে রেখে দালাল রাজু ডায়াগনস্টিক মালিককে ফোনে বলেন, রোগী আছে তাড়াতাড়ি আসুন। রাজুর কথা এবং ভেতরের পরিবেশ দেখে তাদের সন্দেহ হয়। কারণ ভেতরে রোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোনো যন্ত্রপাতি নেই। কোতোয়ালি থানার ওসি শাহ মো. আওলাদ হোসেন জানান, ভুয়া নামসর্বস্ব ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সর্বশেষ খবর