সোমবার, ৪ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

পারাপারে অতিরিক্ত অর্থ আদায়

পদ্মায় প্রশাসনের নামে নেওয়া হয় দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর বিভিন্ন চরাঞ্চল থেকে পদ্মা নদী পার করে গরু হাটে নিতে খামারিদের প্রতি জোড়ায় খেয়াঘাটে দিতে হয় ১০০ টাকা। আর এ গরুই যদি ভারত থেকে আসে, তবে লাগে ৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ সাধারণ টোলের চেয়ে ৫০ গুণ বেশি গুনতে হচ্ছে গরু ব্যবসায়ীদের। শুধু প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করার কথা বলে নেওয়া হয় দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতীয় গরু হওয়ায় ঘাট ইজারাদাররা জোর করে টাকা আদায় করছেন। ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে তারা এর প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না। প্রতিবাদ করলেই প্রশাসন দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে তাদের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী মহানগরীর খানপুর, খিদিরপুর, সাহাপুর ও চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর খেয়াঘাট দিয়ে এখন ভারতীয় গরু পার হয়ে থাকে। এসব ঘাটে এক জোড়া গরু পারাপারে নেওয়া হচ্ছে ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা। গতকাল বেলা ১১টার দিকে খানপুর খেয়াঘাট দিয়ে গরু আনছিলেন কয়েকজন রাখাল। তারা জানান, এ ঘাট দিয়ে বাংলাদেশি গরু পারাপারে জোড়াপ্রতি নেওয়া হয় ১০০ টাকা। আর ভারতীয় গরু হলে নেওয়া হয় ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার। কয়েক দিন আগেও ভারতীয় গরুতে আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা নেওয়া হতো। এখন পদ্মায় পানি বাড়ায় ভাড়াও বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তারা আরও জানান, প্রায় প্রতিদিনই রাজশাহী মহানগরীর খানপুর, খিদিরপুর ও সাহাপুর খেয়াঘাট দিয়ে ৭০০ থেকে ৮০০ গরু-মহিষ পার হয়ে আসছে। এসব গরু-মহিষের মালিকদের কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ টাকার খুব সামান্যই পাচ্ছেন নৌকার মাঝিরা। প্রায় পুরো টাকাটাই নিচ্ছেন ঘাট ইজারাদাররা।

শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী জানান, শুধু নৌকা ভাড়ার কথা বলে প্রতি জোড়া গরু-মহিষ থেকে নেওয়া হয় ৩ হাজার টাকা। আর প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করার কথা বলে নেওয়া হয় আরও দুই থেকে আড়াই হাজার। এসব টাকা না দিলে ঘাট মালিকরাই প্রশাসনকে দিয়ে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করে থাকেন। তাই হয়রানি এড়াতে তারা নীরবে টাকা দিয়ে যাচ্ছেন। জানা গেছে, খানপুর ও খিদিরপুর ঘাট দুটির ইজারা নিয়েছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু বাক্কার কিনু ও নুরু নামে এক ব্যবসায়ী। তারা নিজেরা ঘাটে না থাকলেও তাদের লোকজন সবকিছু দেখাশোনা করেন। রাজশাহীর সিটি হাটে তোলার পর সেখান থেকেই ঘাটের সব টাকা আদায় করেন জিয়াউর রহমান ও বেলাল হোসেন নামে দুই ব্যক্তি। এরা কিনু ও নুরুর হয়ে কাজ করেন।

সর্বশেষ খবর