সোমবার, ৪ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

অজ্ঞান পার্টির তত্পরতা বাড়ছে

সিএনজি চালক ও হকার সেজে শিকার ধরে তারা

মাহবুব মমতাজী

ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীতে অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির তত্পরতা বেড়েই চলছে। অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে এই চক্রের সদস্যরা। বাস, লঞ্চ টার্মিনাল ও ট্রেন স্টেশনসহ অন্যান্য কর্মব্যস্ত এলাকায় হকার সেজে বিভিন্ন খাবার বিক্রেতা এবং বাস ও সিএনজির চালক সেজে সাধারণকে খপ্পরে ফেলছে তারা। তাদের হকারি খাবারে মিশানো থাকে চেতনানাশক ওষুধ। বিভিন্ন যানবাহনে চলাচলের সময় এগুলো কিনে কেউ খেলেই হারিয়ে ফেলছেন জ্ঞান। পরবর্তীতে তাদের উদ্ধার করে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করছে পথচারীরা। এই অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা ঈদের মৌসুমে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা গাড়িচালকদের টার্গেট করে গাড়িসহ টাকা-পয়সা লুটে নিচ্ছেন। প্রতিদিনই রাজধানীতে এসব চক্রের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। অভিযোগ পাওয়া যায়, এই অজ্ঞান পার্টি আর মলম পার্টি চক্রে শুধু হকার বা যাত্রী বেশধারীই নয়, বেশিরভাগই জড়িত গণপরিবহনের চালক-হেলপার ও সিএনজি ড্রাইভাররা। তারা সুকৌশলে বিভিন্ন খাবার, রুমাল ও স্প্রের ঘ্রাণ শুকিয়ে নিঃস্ব করে দেন যাত্রীদের। ১৮ জুন গেন্ডারিয়ায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েন সুজন নামের এক সিএনজি চালক। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২১ জুন কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসার পথে সে চক্রের খপ্পরে পড়ে কামাল উদ্দিন ও নুর ইসলাম নামে দুজন ব্যক্তি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাদের বংশালের সুরিটোলা থেকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করে পথচারীরা। হাসপাতালে সুস্থ হয়ে তারা জানান, কুমিল্লায় বাস থামানোর পর তারা দোকান থেকে খাবার কিনে খান। এর কিছুক্ষণ পর বাসে উঠেই তারা কিছুই বলতে পারেন না। জ্ঞান ফিরলেই তারা নিজেদের সুরিটোলা এলাকায় দেখতে পান। এ সময় তাদের পরনের প্যান্ট কেটে সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায় অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা। ২৩ জুন চকবাজার থেকে সিএনজিতে করে মিলন নামের এক ব্যবসায়ী চকবাজার থেকে কসমেটিক্স পণ্য এবং সঙ্গে বিশ হাজার টাকা নিয়ে ডেমরা যাচ্ছিল। মাঝ পথে সে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সব কিছু খোয়া যায় তার। মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হলে পরে তার জ্ঞান ফেরে। ২৫ জুন দিবাগত রাতে মো. সুমন, আইনুল, কামাল, কবিরসহ মোট পাঁচজন এক সঙ্গে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়লে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে জ্ঞান ফিরলে তারা জানান, সিএনজিতে থাকা অবস্থায় তাদের অজ্ঞান করে মোবাইল ও টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা।

সর্বশেষ খবর