রবিবার, ১০ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে

----------------- ডিএমপি কমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক

জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে

ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া গত রাতে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড পরিদর্শন করেন —বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, জঙ্গিবাদ হচ্ছে দেশি ও আন্তর্জাতিক সমস্যা। জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এদের নির্মূলে যা যা করার দরকার পুলিশ তার সবই করবে। ডিএমপি কমিশনার গত রাতে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ কথা বলছিলেন।

এ সময় বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, ডেইলি সানের উপদেষ্টা সম্পাদক আমির হোসেন, NEWS24-এর হেড অব নিউজ ইব্রাহিম আজাদসহ সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। কমিশনারের সঙ্গে ছিলেন যুগ্ম-কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, গুলশান বিভাগের ডিসি মোস্তাক আহমেদ খানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কয়েক কর্মকর্তা।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, গুলশান ট্র্যাজেডি ও শোলাকিয়ার ঘটনা বাংলাদেশের জন্য প্রথম। এর আগে এ ধরনের ঘটনা আমরা মোকাবিলা করিনি। এর পরও আমরা জীবন দিয়ে জননিরাপত্তা রক্ষা করেছি। গুলশানের ঘটনায় দুজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন, আহত হন ২৬ জন পুলিশ সদস্য। শোলাকিয়ায়ও পুলিশের দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। পুলিশ সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সন্ত্রাসীদের ধরেছে। ঈদগাহ মাঠে যদি গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটত তবে শত শত মানুষ মারা যেত।

ডিএমপি-প্রধান বলেন, ইতিমধ্যে ডিএমপিতে পুলিশের নিরাপত্তাব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। বিশেষ করে গুলশান-বারিধারা-বনানীতে পুরো সিকিউরিটি ব্যবস্থা রিভিউ করে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে চেকপোস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি, তল্লাশি, ব্লক রেইড, পুলিশ পেট্রল, মোবাইল পেট্রল, মোটরবাইক পেট্রলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশের পাশাপাশি সব প্রতিষ্ঠানের মালিকদের এগিয়ে আসার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

দেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়ন ব্যাহত করতে যারা পবিত্র ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করে এ ধরনের জঙ্গি-সন্ত্রাসী তত্পরতা চালাচ্ছে তাদের মূলোৎপাটন করার জন্য তাদের পৃষ্ঠপোষকদের আইনের আওতায় আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করে কমিশনার জানান, এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। ২০১৩ ও ২০১৫ সালে যেভাবে এটা মোকাবিলা করেছি তেমনি ২০১৬ সালেও আমরা এটা মোকাবিলা করতে পারব। তিনি নগরবাসীদের নিজস্ব নিরাপত্তায় সচেতন হওয়ার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, সন্তানরা স্কুল, কলেজ, কোচিংয়ে যাচ্ছে তারা ওই সময়টায় জঙ্গি ব্যবসায়ীদের ফাঁদে পড়েছে কিনা তা অভিভাবকদের দেখতে হবে। আমাদের কোমলমতি সন্তানদের ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে তাদের মগজ ধোলাই করা হচ্ছে কিনা তা পরিবার থেকে দেখা দরকার। নিখোঁজ হলে নিখোঁজের সংবাদ তাত্ক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানাতে হবে। ডিএমপি কমিশনার বলেন, ’৭১, ’৫২ ও ’৬৯-এর মতো সমগ্র জাতি একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যেভাবে নেমেছিল সেভাবে কাজ করলে সাফল্য আসবেই। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র অন্যদিকে চলে যাচ্ছে কিনা কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে। সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ ব্যাপারে পুলিশ কথা বলবে। এ ধরনের অপতত্পরতা রোধে তাদের এগিয়ে আসতে হবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, বিভিন্ন ঘটনায় দেখা গেছে, জঙ্গি তত্পরতায় জেএমবি ও এবিটি সদস্যরা জড়িত। তাদের আন্তর্জাতিক কোনো কানেকশন পুলিশ এখনো খুঁজে পায়নি। তবে তাদের আন্তর্জাতিক মিডিয়া কানেকশনটা বোঝা যায়। এ দেশে জঙ্গিরা যে কোনো ঘটনা ঘটালে ৫ মিনিটের মধ্যে সাইট ইন্টেলিজেন্স সুদূর পাশ্চাত্যে বসে খবর দিয়ে দিচ্ছে।

সর্বশেষ খবর