শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

শিল্প ও আবাসিক বর্জ্যে হালদা নদীর নাভিশ্বাস

বিরূপ প্রভাব মা মাছের ওপর

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম প্রাকৃতিক মত্স্য প্রজননকেন্দ্র হালদা নদী। কিন্তু বর্তমানে দুই ইউনিয়নের সাতটি খাল হয়ে শিল্প ও আবাসিক বর্জ্য সরাসরি গিয়ে পড়ছে এ নদীতে। ফলে নাভিশ্বাস উঠেছে নদীটির। যার প্রভাব ফেলছে মা মাছের ওপর। এ ছাড়া দূষণে ক্রমশ কমছে চাষাবাদের জমি। দূষিত ‘কালো পানিতে’ ভরা খালও এখন মাছশূন্য।  সঙ্গে  পরিবেশ বিপর্যয় ঘটাচ্ছে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ও মাদার্শা ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকা।

হালদা নদীতে সরাসরি বর্জ্য পড়ে দূষণ করা খালগুলো হলো মাদার্শা ইউনিয়নের খন্দকিয়া, কাঁটাখালী ও মাদারী খাল। এর সঙ্গে আছে শিকারপুর ইউনিয়নের কুয়াইশ, বাথুয়া, হামিদিয়া ও কৃষ্ণখালী খাল। হালদা নদী গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, হালদা নদীর জন্য এ বছর ছিল মহাবিপর্যয়ের বছর। কারণ অতীতে প্রতি বছরই এ নদীতে মা মাছ মূল ডিম ছেড়েছিল। মনুষ্য বিপর্যয়ে হালদা নদী এখন অনেক বেশি বিরক্ত। এ বিপর্যয় অব্যাহত থাকলে শিগগিরই নদীটি দেশের জন্য কেবলই ইতিহাস হয়ে যাবে। তাই এ নদীকে মানুষ্য অত্যাচার থেকে রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি।

হালদা নদী রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, অপরিকল্পিত বাঁক কাটা, রাবার ড্যাম নির্মাণ, বালু উত্তোলন, শিল্প ও আবাসিক বর্জ্যে হালদা এখন চরম বিপর্যয়ের মুখে। যার নেতিবাচক ফল আমরা এ বছর দেখেছি। তাই এটিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিকে রক্ষা করা জাতীয় স্বার্থেই জরুরি। 

জানা গেছে, প্রায় দুই বছর ধরে নগরীর বায়েজিদ থেকে কুলগাঁও এলাকার শতাধিক শিল্প-কারখানার নালা গিয়ে পড়ছে হালদা নদীতে। এর মধ্যে মদিনা ট্যানারি, রওশন ট্যানারি ও রিফ লেদার নামক প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য হালদায় পড়ছে কৃষ্ণখালী খাল হয়ে। কেডিএস ডাইং ও টিকে ডাইংয়ের বর্জ্য পড়ছে খন্দকিয়া খাল হয়ে। ইব্রাহিম কটন মিলের বর্জ্য পড়ছে কাঁটাখালী খাল হয়ে। এশিয়ান পেপার মিলের বর্জ্য পড়ছে মাদারী খাল হয়ে। তা ছাড়া চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ‘অনন্যা’ আবাসিক এলাকার কাটা মাটি ও আবাসিক বর্জ্য প্রকল্পের মূল নালা হয়ে কুয়াইশ, কৃষ্ণখালী ও খন্দকিয়া খাল হয়ে হালদায় পড়ছে। দূষণের মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাবে হালদায় চলতি মা মাছ নমুনা ডিম ছাড়লেও অন্য বছরের মতো স্বাভাবিক ডিম ছাড়েনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বামুনশাহী খালের দূষিত পানি মিশছে আশপাশের আবাদি জমিতে। এরই মধ্যে শিকারপুর ও মাদার্শা ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেক পুকুর ও জলাশয় দূষিত হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর