বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে হার্ডলাইনে প্রশাসন

বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন কার্যক্রম শুরু

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ ৩০ পাহাড়ের অবৈধ স্থাপনা ও বসতভিটা উচ্ছেদে হার্ডলাইনে প্রশাসন। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অতিঝুঁকিপূর্ণ চার পাহাড় থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তিন সহকারী কমিশনারকে (ভূমি)। ইতিমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের অবৈধ বাসিন্দাদের নাগরিক সুবিধাগুলো বিচ্ছিন্নের কাজ শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত ২০ জুন বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ১৫তম সভায় ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের সিদ্ধান্ত হয়। এ ব্যাপারে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয় সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আছিয়া খাতুন, আগ্রাবাদ সার্কেলের নোমান হোসেন ও চান্দগাঁও সার্কেলের মো. রুহুল আমিনকে। এ তিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মতিঝর্ণা, বাটালি হিল, এ কে খান পাহাড়, আমিন টেক্সটাইলের পাহাড় ও পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করতে নির্দেশ দেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন। তিনি বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে চার পাহাড়ে অবৈধ বাসিন্দাদের সব নাগরিক সুবিধা বন্ধ করে উচ্ছেদ করতে বলা হয়েছে।  

সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আছিয়া খাতুন বলেন, সোমবার প্রথম দিনে মতিঝর্ণা ও বাটালি পাহাড়ের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ প্রায় ১৫০টি ঘরের বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। একই সঙ্গে সেখানে আবার কেউ সংযোগ দিচ্ছে কিনা তারও ফলোআপ করছি। কারণ অতীতে এরকম বিচ্ছিন্ন করার পর ফের সংযোগ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সরকারি দফতরের নাগরিক সুবিধা দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নতুন করে কোনো বাসায় সংযোগ দেওয়া হলে অভিযুক্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগ আছে, একজন স্থানীয় প্রথমে এক টুকরো জায়গা দখল করে সেখানে একটি বাসা তৈরি করে ভাড়া দেয়। ক্রমে পাশের জায়গা দখল করে বাসা তৈরি করে। এরপর বিভিন্ন সংস্থার কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী অর্থের বিনিময়ে এসব অবৈধ বাসায় নাগরিক সুবিধা দিচ্ছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কেবল মতিঝর্ণা ও বাটালি পাহাড় এলাকার এক হাজারের বেশি ঘরে অবৈধ গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ আছে। তা ছাড়া একটি বিদ্যুতের মিটার নিয়ে তা থেকে ২০-৩০টি ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার ঘটনাও আছে। একইভাবে পদ্ধতি ব্যবহৃত হয় গ্যাস লাইনেও।  পরিবেশ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে ১৯৩ মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

সর্বশেষ খবর