নানা চ্যালেঞ্জে হাবুডুবু খাচ্ছে বিকাশমান পোলট্রি শিল্প। পোলট্রি খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জকে সঙ্গে নিয়েই প্রতিনিয়ত ব্যবসা করতে হচ্ছে তাদের। এর মধ্যে আছে-পোলট্রি শিল্পের ওপর আয়কর, কিছু কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কারোপ, অগ্রিম আয়কর, পোলট্রি পণ্যের দাম খামারিদের জন্য সহনীয় না থাকা, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সিংহভাগ কাঁচামালের চাহিদা না মেটা, চাহিদা পূরণ ও উৎপাদন বাড়ানোর স্বার্থে সরকারি বিশেষ প্রণোদনা না থাকা, ফিড ও ছানা ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট।
চট্টগ্রাম পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রিটন চৌধুরী বলেন, আমাদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো- পোলট্রি ফিড ও একদিনের ছানা। এক কেজি ফিড তৈরি করতে খরচ হয় ৩২ থেকে ৩৫ টাকা। কিন্তু এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা। একইভাবে একদিনের ছানার দামও যখন-তখন বাড়ে। এবার একটি ছানা ৯৬ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এখন ফিড ও ছানার ব্যবসা ৬-৭ জনের একটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের কাছেই জিম্মি খামারিরা। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রিয়াজুল হক বলেন, বাচ্চার দামটা সর্বজনীন সমস্যা। এখানে নানা সমীকরণও হয়। আর ফিড কাঁচামাল নির্ভর। এটি ওপেন মার্কেটের বিষয়। ফিড বাজারজাতকরণে বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতাও আছে। এসব কারণে কার্যত ছোট খামারিরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে আমরা মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা থেকে সরকারের কাছে সুপারিশ করেছি- পোলট্রি শিল্পের জন্য একটি জোন করতে।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সাইয়েন্স ইউনিভার্সিটির পোলট্রি রিচার্স অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর পরিতোষ কুমার বিশ্বাস বলেন, নানা বিবেচনায় বিকাশমান পোলট্রি খাতে বিভিন্ন সমস্যা জিইয়ে থাকে। এর মধ্যে পোলট্রি পণ্যের বাজার বেশি থাকা, এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা আতঙ্ক। তবে এসব সমস্যা নিরসনে দরকার এ সংক্রান্ত একটি ‘জাতীয় পলিসি’। যার মাধ্যমে সৃষ্ট নানা সমস্যা সমাধান সম্ভব হতো। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক গবেষণা সূত্রে জানা যায়, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় এক শতাংশ আসে পোলট্রি শিল্প থেকে। গার্মেন্টসের পর এটিই দ্বিতীয় বৃহত্তম কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী খাত। এ খাতে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ জড়িত। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে পোলট্রি বোর্ড গঠনের যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয় গবেষণায়।