শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট

বেশি চাহিদা দেশি গরুর

মোস্তফা কাজল ও শাহজাদা মিয়া আজাদ

রাজধানীর গাবতলী ও রংপুরে কোরবানির পশুর হাট জমে উঠতে শুরু করেছে। ঈদুল আজহার এখনো কয়েক দিন বাকি থাকলেও এসব হাটে বাহারি গরু-ছাগল, ভেড়া-মহিষের পাশাপাশি উট-দুম্বার আগমন ঘটেছে। হাটের অবস্থা সম্পর্কে গতকাল খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর গাবতলী ও রংপুর বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন হাটে ক্রেতারা কোরবানির পশুর দর ও খোঁজখবর করছেন। ধারণা পাওয়া গেছে, দর নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় পক্ষই এখন পর্যন্ত সন্তুষ্ট। হাটগুলোয় ছোট ও মাঝারি আকারের গরু-ছাগলের চাহিদা বেশি। ক্রেতাদের বেশি আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে ৩৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা দামের গরুর দিকে। বড় গরুর মধ্যে মুন্সীগঞ্জের ধবধবে সাদা গাভী ও কুষ্টিয়ার লাল ষাঁড়ের চাহিদা বেশি।

জানা গেছে, ৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে ২২টি হাটের কার্যক্রম শুরু হবে। গতকাল এসব হাটের কার্যাদেশ সংশ্লিষ্ট ইজারাদারের নামে ইস্যু করা হয়েছে।

গাবতলী হাট : সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, গতকাল গাবতলী হাটের প্রধান আকর্ষণ ছিল মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিমের সাদা গাভী। এদিন চার-পাঁচটি গাভী হাটে তোলা হয়। জানা গেছে, পুরান ঢাকার ধনাঢ্য পরিবারের প্রধান আকর্ষণই মীরকাদিমের গাভী। কারণ এটা তাদের ঐতিহ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এই গাভীর দাম ছিল তুলনামূলক বেশি। তার পরও এসব গাভী বিক্রি হতে সময় লাগেনি। হাটে আসামাত্রই কিনে নিয়ে গেছেন আগ্রহীরা। জানা গেছে, আবদুল আলী নামে এক বেপারি বিকাল সাড়ে ৩টায় মীরকাদিমের চারটি গাভী নিয়ে হাটে আসেন। এ সময় হাটজুড়ে হৈচৈ পড়ে যায়। তিন ঘণ্টার মধ্যে গাভীগুলো বিক্রি হয়ে যায়। পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী হাজী খালেক খান একাই দুটি গাভী আড়াই লাখ টাকায় কিনে নেন। খোকন সরদার নামে আরেক ব্যবসায়ী একটি গাভী সাড়ে ৪ লাখ টাকায় কেনেন।

এই হাট ঘুরে আরও দেখা গেছে, বড় ও ছোট আকারের দুই থেকে তিন হাজার গরু হাটে উঠেছে। মাঝারি গরুগুলো ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে দাম হাঁকা হয়েছে। ছোট গরু ৪০-৫০ হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হতে পারে বলে ক্রেতারা ধারণা দিয়েছেন। হাট ঘুরে আরও দেখা গেছে, এবার ছাগলের দাম একটু বেশি। ৮-১০ কেজি ওজনের ছাগল ৭-৮ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ১২-১৪ কেজি ওজনের ছাগল বা খাসি ১০-১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গাবতলী হাটে ১০ লাখ টাকা দামের একটি গরু নিয়ে আসেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার লোকমান হোসেন। তিনি বিকাল ৪টায় ওই গরু সাড়ে ১৩ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। গাবতলী হাটে ২২টি গরু নিয়ে আসা পাবনার ব্যবসায়ী জামশেদ কবির বলেন, ‘গ্রাম থেকে চড়া দামে গরুগুলো কিনে এনেছি। ক্রেতারা এবার দাম অনেক কম বলছেন। এজন্য এখনো বিক্রি করতে পারিনি।’ কুষ্টিয়ার খামারি আবু তাহের জানান, তিনি বেশি দামের আশায় তিনটি গরু নিয়ে ঢাকা এসেছেন। কিন্তু ভাগ্যের চাকা ঘুরছে না। তিনি বলেন, প্রতি বছর কোরবানির ঈদের পর বাছুর কিনে লালন-পালন করে কোরবানির ঈদে বিক্রি করেন। এবার বেশি টাকার আশায় গাবতলী গরুর হাটে এসেছেন। দাম থাকলেও গত বছরের মতো নয়। এর চেয়ে গ্রামের হাটেই দাম বেশি। আদাবরের আবদুস সামাদ গতকাল গাবতলী হাট থেকে ৫৫ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছেন। তিনি বলেন, ‘দাম সাধ্যের মধ্যেই আছে। তাই নয় দিন আগেই কিনে ফেললাম। কোরবানির হাট জোয়ার-ভাটার মতো। কখন ওঠে, কখন নামে বলা যায় না।’ গাবতলী হাটের গরু ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান জানান, ক্রেতার চাহিদা যত বাড়বে দামও তত বাড়বে। এ হাটে তুলনামূলক কম দামে মহিষ বিক্রি হতে দেখা গেছে। বড় আকারের মহিষ ৪০-৪২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাঝারি আকারের ৩০-৩২ হাজার টাকায়। ছাগল বেপারি জসিম মিয়া জানান, এবারও রাজধানীর ২২ হাট শুরু হবে আরও পাঁচ দিন পর।

সর্বশেষ খবর