শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বকেয়া বেতন দাবিতে বিক্ষোভ

বরিশাল নগর ভবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

চার মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বরিশাল সিটি মেয়র আহসান হাবিব কামালের সামনে বিক্ষোভ করেছেন করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল দুপুর ১২টায় নগর ভবনে মেয়রের অফিসকক্ষের সামনে বিক্ষোভের সময় মেয়র ও কয়েকজন কাউন্সিলরের সঙ্গে বিক্ষোভকারী কর্মকর্তাদের ধাক্কাধাক্কিও হয় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ সময় সেখানে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ নগর ভবনে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

বিক্ষোভকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, বিক্ষোভ চলাকালে মেয়র তাদের বেতন না দেওয়ার ও চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেন। বিক্ষোভকারীদের দমন করতে মেয়র গতকাল নগর ভবনে ছাত্রদল ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদেরও জড়ো করেছিলেন। কয়েকজন কাউন্সিলরও মেয়রের পক্ষে সন্ত্রাসীর ভূমিকা পালন করেছেন বলে অভিযোগ তাদের। তারা জানান, কাউন্সিলরদের চার মাসের সম্মানী বকেয়া থাকলেও তারা চলতি সপ্তাহে দুই মাসের সম্মানী উত্তোলন করেছেন। বকেয়া বেতন পেয়ে তারা মেয়রের পক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দমনে নেমেছেন। মেয়র আহসান হাবিব কামাল বলেন, রাজস্ব আয় যথাযথভাবে না হওয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন সঠিক সময়ের মধ্যে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তা জেনেও তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে আন্দোলনের নামে নগর ভবনে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করছেন, যা চাকরি বিধিমালা ভঙ্গের শামিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সকাল ১০টার পর থেকে শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী নগর ভবনের নিচ তলার প্রধান ফটক আটকে বিক্ষোভ করতে থাকেন। মেয়র ও কয়েকজন কাউন্সিলর চলমান পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিদর্শন করে নগর ভবনে ফেরেন দুপুর ১২টায়। তিনি প্রধান ফটকে বিক্ষোভকারীদের সামনে পড়েন। এ সময় মেয়র ফটক খুলে দোতলায় তার অফিসকক্ষে চলে যান। বিক্ষোভকারীরাও মেয়রের কক্ষের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে মেয়র বের হয়ে বিক্ষোভকারীদের ধমকাতে থাকেন। তিনি বলেন, আগের মেয়রের সময়ও তিন মাসের বেতন বকেয়া ছিল, তখন কোনো আন্দোলন হয়নি। তার দায়িত্বকালে বেতন বকেয়া পড়েছে এক মাসের। এখন আন্দোলন করা হচ্ছে কোন যুক্তিতে? একপর্যায়ে তিনি আন্দোলনকারীদের বেতন না দেওয়াসহ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দেন। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মেয়র ও কাউন্সিলরদের ধাক্কাধাক্কি শুরু হলে সেখানে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। কর্মচারীরা জানান, আন্দোলনের খবর পেয়ে মেয়র তার অনুসারী কাউন্সিলর, ঠিকাদার ও ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের নিয়ে নগর ভবনে যান। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের এক বিএনপি নেতার নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় রাসেল খান নামে এক কর্মকর্তা আহত হন। পরে মেয়র তার কক্ষে আলোচনার জন্য ডাকলেও আন্দোলনকারীরা সেখানে যাননি। বকেয়া পরিশোধের জন্য মেয়রকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আলটিমেটাম দেন তারা। নগর ভবনে কর্মরত ৫ শতাধিক স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীর চার মাসের বেতন বকেয়া থাকলেও ঈদুল আজহার আগে তাদের বকেয়া এবং ঈদ বোনাস দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে বুধবার থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর