শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

রাজধানীতে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৫০, খাসি ২০ টাকা

দাম নির্ধারণ ব্যবসায়ীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

এবারের ঈদুল আজহায় কোরবানি দেওয়া পশুর চামড়া সংগ্রহে দাম নির্ধারণ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানিয়েছেন, ট্যানারি ব্যবসায়ীরা ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া কিনবেন ৫০ টাকায় ও ঢাকার বাইরে এর দাম হবে ৪০ টাকা। এ ছাড়া সারা দেশে খাসির লবণযুক্ত চামড়া ২০ টাকা ও বকরির চামড়া ১৫ টাকায় সংগ্রহ করা হবে। পশু ও এর আকারভেদে এবার দাম ঠিক করা হয়েছে গতবারের চেয়ে কম। গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডির এক রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন চামড়া ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএলএলএফইএ) সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ, রাজধানীতে প্রতি বর্গফুট বাংলাদেশ হাইডস অ্যান্ড স্কিনস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।

বিএফএলএলএফইএ সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন মহিষের চামড়ার দাম কেন নির্ধারণ করা হয়নি তা জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশে মহিষ খুব একটা জবাই হয় না। এর পরও যা আসে আমরা প্রতি বর্গফুট ২৫ টাকা দরে কিনব।’

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দর পতন হয়েছে। এ ছাড়া গতবারের কেনা চামড়ার ৩০ শতাংশ এখনো মজুদ রয়ে গেছে। সবকিছু মিলিয়ে এবারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি যুক্তি দেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গত এক বছরে দামড়ার দাম ৩৫ শতাংশ কমে গেলেও এবার কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহের জন?্য যে দাম তারা ঠিক করেছেন তা গত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ কম। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, চামড়া কেনার সময় ট?্যানারি মালিকরা ‘‘আনহেলদি’’ কোনো প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হবেন না। এতে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়বে।’

বাংলাদেশ হাইডস অ্যান্ড স্কিনস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, গত বছর গরম ও ঠিক সময় উপযুক্ত পরিমাণ লবণ না দেওয়ায় প্রায় ২০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। এবার পশু জবাই হওয়ার পাঁচ-ছয় ঘণ্টার মধ্যে চামড়ায় লবণ দিতে অনুরোধ করেন তিনি। বিভিন্ন মাদ্রাসার সংগ্রহ করা চামড়া বেশি নষ্ট হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আশা করছি মাদ্রাসার জন্য চামড়া সংগ্রহ করার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা লবণ দেবেন অথবা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেবেন।

প্রসঙ্গত, গত বছর ট্যানারি ব্যবসায়ীরা ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় কিনেছেন। এ ছাড়া প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত মহিষের চামড়ার দাম ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা; আর সারা দেশে খাসির লবণযুক্ত চামড়া ২০ থেকে ২২ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৫ থেকে ১৭ টাকায় সংগ্রহ করা হয়েছিল।

সরকারের তথ?্য অনুযায়ী, এ বছর দেশে কোরবানির উপযোগী প্রায় ৩৩ লাখ গরু ও মহিষ মজুদ আছে, যা চাহিদার সমান। ফলে এ বছর অন্য দেশ থেকে গরু না আনলেও চলবে।

ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বছরে বাংলাদেশ থেকে ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ গরুর চামড়া, ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগলের, ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষের এবং ১ দশমিক ২ শতাংশ ভেড়ার চামড়া। এর অর্ধেকের বেশি আসে কোরবানির ঈদের সময়।

সর্বশেষ খবর