খুলনার রূপসা সেতু যানবাহন চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দুই প্রান্ত থেকে মূল সেতুতে ওঠার মুখেই সড়কের মসৃণতা নষ্ট হয়ে এবড়ো-থেবড়ো গর্ত তৈরি হয়েছে ও পিচ উঁচু-নিচু হয়ে গেছে। এতে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। মাঝে-মধ্যেই পণ্যবাহী ট্রাক উল্টে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।
ভুক্তভোগী অনেকেই জানিয়েছেন, বিপজ্জনকভাবে সেতুতে পিচ উঁচু-নিচু হয়ে যাওয়া ও গর্তের কারণে প্রায়ই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছেন যানবাহন চালকরা। বৃষ্টির সময় অবস্থা আরও ভয়ঙ্করঝুঁকিতে রূপসা হয়ে ওঠে। এ ব্যাপারে সেতু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও বাস চালকদের কাছ থেকে জানা গেছে, সময়মতো সেতুর সংস্কার না করা, অত্যধিক গরমে পিচ উঁচু-নিচু হয়ে যাওয়া ও সেতুর ওপর দিয়ে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিন দেখা গেছে, নদীর পূর্বপাশে সেতুতে ওঠার মুখে বেশ খানিকটা জায়গায় পিচ উঁচু হয়ে গেছে। একই অবস্থা হয়েছে সেতুর উপরের অংশেও। পিচ উঁচু-নিচু হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সেতুতে লম্বালম্বিভাবে দুই পাশের পিচ বসে গেছে। রাতেরবেলায় সেতুর উপরে যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ ঠিক রাখাই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। খুলনা-পিরোজপুর রুটের বাস চালক রহমান মুন্সি জানান, সেতুর দুই প্রান্তে ওঠানামার জায়গাগুলোতে পিচ উঁচু হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত গতির যানবাহন চালকদের সেতুর এই অংশে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে হিমশিম খেতে হয়। অনেক সময়ই এই অবস্থার কারণে কম গতির যানবাহনের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটছে। অভিযোগে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ২১ মে সেতুটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার পর থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় ঠিকাদারের মাধ্যমে সেতুটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাঝে-মধ্যেই সেতুর দুই প্রান্তে উঁচু হয়ে যাওয়া জায়গাগুলো সমান করার কাজ করলেও তা টেকসই হয় না। রূপসা সেতুর টোল আদায় ও তদারকির দায়িত্বে থাকা জিএসআইসি-সেল জেভি-এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম ভুইয়া গতকাল বলেন, ‘এটা রাস্তার একটা বড় অসুখ। অসংখ্যবার কেটেকুটে ঠিক করা হয়েছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। বৃষ্টি কমলে নতুন করে কাজ করা হবে।’ সড়ক ও জনপথ বিভাগ খুলনার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মামুন কায়সার বলেন, ‘বিষয়টি আমরা দেখব। রোড ডিজাইন অ্যান্ড সেফটি সার্কেলকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। তারা খুব শিগগির ভিজিট করবে এবং সমস্যাগুলো খুঁজে দেখবে।’