সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

পুঁজি সংকটে রাজশাহীর চামড়া ব্যবসায়ীরা

ভারতে পাচারের শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর চামড়া ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে। কেননা গত বছরের বকেয়া টাকা এখনো পরিশোধ করেননি ট্যানারি মালিকরা। তাই এ বছর মৌসুমি ফড়িয়াদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনতে পারবেন কিনা, তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় তারা। পাশাপাশি বাজারে বেড়েই চলেছে লবণের দাম, বাড়ছে চামড়া সংরক্ষণ ব্যয়, শ্রমিকের মজুরি, পরিবহন খরচও। এসব কারণে রাজশাহীর চামড়া ব্যবসায়ীরা এবার হতাশায় ভুগছেন। তারা বলছেন, গত বছরের চামড়া বিক্রির টাকা এখন পর্যন্ত না পাওয়ায় কোরবানির ঈদ যেন ‘আপদ’ হয়ে উঠেছে তাদের কাছে। রাজশাহী মহানগরীর রেলগেট এলাকার চামড়া ব্যবসায়ী হাসান আলী জানান, কোরবানির ঈদে চামড়া কেনার জন্য গত বছর প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার সরকার নির্ধারিত দাম ছিল ৭০ টাকা। কিন্তু ওইদিন মৌসুমি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাদের ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরেও চামড়া কিনতে হয়েছে। পরে চামড়া বিক্রির পর এখন পর্যন্ত তাদের বহু টাকা আটকে রেখেছেন ট্যানারি মালিকরা। এতে কমে গেছে তাদের পুঁজি। আর অল্প পুঁজি নিয়ে তারা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে টেক্কা দিতে পারবেন কিনা তা নিয়েই এখন দুশ্চিন্তায়। রাজশাহী জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ জানান, রাজশাহীতে প্রতি কোরবানি ঈদে প্রায় ৮০ হাজার গরু-মহিষ ও প্রায় দেড় লাখ ছাগল-ভেড়া কোরবানি হয়। এই বিপুল পরিমাণ চামড়া তারা কিনে কয়েক দিন সংরক্ষণের পর নাটোরের আড়তগুলোয় নিয়ে যান। সেখান থেকে ঢাকার ট্যানারি মালিকরা তা কিনে নেন। এসব চামড়ার প্রায় পুরোটাই তাদের বিক্রি করতে হয় বাকিতে। প্রতি বছর বিক্রির সাত-সাত মাসের মধ্যে ট্যানারি মালিকরা টাকা পরিশোধ করে দেন। কিন্তু এবার গত কোরবানি ঈদের চামড়ার প্রায় ৮০ ভাগ টাকা এখনো পরিশোধ করেননি তারা। ফলে এবার পুঁজি সংকটই প্রকট হয়ে উঠেছে এখানকার ব্যবসায়ীদের কাছে। সীমান্ত পথে চামড়া ভারতে পাচারের কোনো শঙ্কা আছে কিনা— জানতে চাইলে তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে এ ধরনের শঙ্কা নেই।

এবার বড় সংকট হলো অর্থ। এ বছর অল্প পুঁজি নিয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চামড়া কেনা প্রকৃত ব্যবসায়ীদের জন্য অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। তা ছাড়া লবণের দামও বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। বেড়েছে পরিবহন খরচ ও শ্রমিকের মজুরি। বকেয়া আদায় না হওয়ায় চামড়া কিনতে রাজশাহীর ব্যবসায়ীদের এবার এমনিতেই হিমশিম খেতে হবে। গত বছর এক বস্তা লবণের দাম ছিল ৬০০ টাকা। এ বছর লবণের দাম বাড়ানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর