শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
তদন্ত চায় এনবিআর

বিলাসী অবৈধ গাড়ির জাল কাগজকে ঠিক বলছে বিআরটিএ

রুহুল আমিন রাসেল

শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার মতলবে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আমদানি করা কোটি কোটি টাকা দামের অবৈধ বিলাসবহুল গাড়ির ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি—বিআরটিএ। অভিযোগ উঠেছে, দাখিলকৃত বিল অব এন্ট্রি ভুয়া এবং কাগজপত্র জাল জানা সত্ত্বেও রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি দুদক তদন্ত করুক, এনবিআর এটাই চায়। বিআরটিএ এভাবে জালিয়াতি করে বেশ কিছু অবৈধ বিলাসী গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দেয় বলে জানায় শুল্ক গোয়েন্দা।

এ প্রসঙ্গে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা তদন্তে দেখেছি বিআরটিএ ভুয়া বিল অব এন্ট্রি ও জাল কাগজপত্র সত্ত্বেও অবৈধ গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দিয়েছে। এমনকি নিয়মিত নবায়ন করে গাড়ির ফিটনেসও দিয়েছে।’

এর আগে সরকারের রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান জাতীয় রাজস্ব বোর্ড—এনবিআর ১৮ আগস্ট পাঠানো গোপনীয় প্রতিবেদনে গাড়ির ভুয়া বিল অব এন্ট্রি করে বিআরটিএ’র দেওয়া ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন প্রদানের বিষয়টি দুদকের মাধ্যমে তদন্ত করানোর অনুরোধ জানায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। সংস্থাটির মহাপরিচালক ড. মইনুল খান স্বাক্ষরিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে গত ২৬ জুন শুল্ক গোয়েন্দার কর্মকর্তারা সুনামগঞ্জের ১৫ হাজীপাড়া বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোর্শেদ আলম বেলালের কাছ থেকে কালো রঙের একটি বিলাসবহুল লেক্সাস গাড়ি আটক করেন। এই গাড়ির কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী রুপা মিয়া চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে গাড়িটি কারনেট-ডি প্যাসেজের সুবিধায় আমদানি করেছেন। তার ব্রিটিশ পাসপোর্ট নম্বর ১৫৮৭৯৩২০৩। তবে শর্তানুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের পরে গাড়িটি বিদেশে ফেরতের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা করা হয়নি। এতে গাড়িটি আমদানিকালে প্রযোজ্য শুল্ককর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে এবং আমদানিকারক এই শুল্ক পরিশোধ না করে শুল্কসংক্রান্ত অপরাধ করেছেন।

শুল্ক গোয়েন্দার প্রতিবেদনে বলা হয়, শুল্ক ফাঁকির উদ্দেশ্যে সুকৌশলে বিআরটিএ’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে গাড়িটি অন্যের নামে স্থানান্তর করা হয়। গাড়িটি আটকের সময় ‘সিলেট ঘ-১১-০৩০১’ রেজিস্ট্রেশন নম্বরের প্লেট পাওয়া যায়। শুল্ক গোয়েন্দা গাড়িটির বর্তমান মালিক মো. মোর্শেদ আলম বেলালকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন, তিনি সিলেট বিআরটিএ প্রদত্ত রেজিস্টার্ড অনুমোদন অবস্থায় রুপা মিয়ার কাছ থেকে কিনেছেন।

শুল্ক গোয়েন্দার প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের রপ্তানি শিপিং বিলের একটি ভুয়া কাগজ (শিপিং বিল নম্বর ওয়াইএইচসিজিএস ৮২৬২০০৫) দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই অসততার আশ্রয় নিয়ে এটা করা হয়েছে। এ ধরনের জালিয়াতি ও অসততা দুদক আইনে তফসিলভুক্ত অপরাধ হিসেবে বিবেচিত ও তদন্তযোগ্য। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য দুদকে পাঠাতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগটি শুল্ক আইনের অধীন ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর