মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

মূল আসামি রবিন ধরাছোঁয়ার বাইরে

নিজস্ব প্রতিবেদক

মূল আসামি রবিন ধরাছোঁয়ার বাইরে

মিরপুরের সাইক ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী আফসানা ফেরদৌসের রহস্যজনক মৃত্যুর মামলায় সন্দেহভাজন মূল আসামি হাবিবুর রহমান রবিন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে পুলিশ এ ঘটনায় ২৭ আগস্ট চারজনকে আটক করেছে। আটককৃতদের তিনজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আফসানাকে রবিন আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছিল বলে তথ্য পেয়েছে কাফরুল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসামিদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। গতকাল কাফরুল থানার এসআই হাফিজ জানান, আফসানা ফেরদৌস মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় রবিনের বাবা আবদুল হাইসহ মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য তিনজন মশিউর রহমান মূসা, সিফাতুল ইসলাম সিফাত ও আশিকুর রহমান ভূঁইয়াকে আদালত তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে। মূল হোতা রবিনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই মূল কারণ আমরা পরিষ্কার করতে পারব।

সূত্র জানায়, রবিন গত মাসেই দেশত্যাগ করেছেন। আফসানার মৃত্যু নিয়ে আন্দোলন শুরুর পরপরই ছাত্রলীগের তেজগাঁও কলেজের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিন ভারতে চলে যান। আফসানার মৃত্যুর ঘটনায় ২৪ আগস্ট আল হেলাল হাসপাতালের সিসি টিভির ফুটেজ দেখে কয়েকজনকে শনাক্ত করে পুলিশ। এর মধ্যে রবিনের চেহারাও পাওয়া যায়। আফসানার ভাই ফজলে রাব্বী বলেন, মূল হোতাকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, আমরা তদন্ত অনেকদূর এগিয়েছি। কিছুদিনের মধ্যে ভালো কোনো ফল হাতে পাবো।

গত ১৩ আগস্ট রাজধানীর কাফরুলের আল-হেলাল স্পেশালাইজড হাসপাতাল থেকে এক অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করে কাফরুল থানার এসআই ফজলুল হক। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। পরে সেই অজ্ঞাত নারীর পরিচয় মিলে। তার নাম আফসানা ফেরদৌস। তিনি সাইক ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজির স্থাপত্য বিদ্যার শেষ বর্ষের ছাত্রী। তার গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, আফসানাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার দিন রাতে অপরিচিত এক মোবাইল থেকে আফসানার মাকে জানানো হয় আফসানার লাশ ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। এরপর আফসানার মা ঠাকুরগাঁও থেকে আত্মীয়স্বজনদের বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে আফসানার মামা ও অন্যরা বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে দেখেন সেখানে লাশ নেই। এরপর আবারও অপরিচিত মোবাইল থেকে জানানো হয় আফসানার লাশ কাফরুলের আল-হেলাল হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারে একটি লাশ কাফরুল থানায়। এরপর কাফরুল থানায় আফসানার ছবি দেখানো হলে ডিউটিরত পুলিশ জানায় লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। সে দিনই রাত ৩টায় ঢাকা মেডিকেল মর্গে আফসানার লাশ শনাক্ত করেন তার স্বজনরা। পরিবারের ধারণা আফসানাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। আর এ ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে। পুলিশ জানায়, দুই যুবক সিএনজিতে করে আল-হেলাল হাসপাতালে অজ্ঞাত এক নারীকে নিয়ে আসে। সেখানে জরুরি বিভাগের স্ট্রেচারে তাকে রেখে পালিয়ে যায় যুবকরা। কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসপাতালে আসার আগেই অজ্ঞাত নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন। এ সময় মেয়েটির গলার নিচের দিকে দাগ দেখা যায়। বিষয়টি সন্দেহজনক হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাফরুল থানায় খবর দেয়। পরে থানার এসআই ফজলুল হক লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্তকারী ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মো. শফিউজ্জামান বলেন, শ্বাসরোধের মাধ্যমে আফসানার মৃত্যু হয়। তবে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর