সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নোভা-বাদশার বাসর পাঁচ-ছয় দিন পর

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

নোভা-বাদশার বাসর পাঁচ-ছয় দিন পর

ধুমধাম করে বিয়ে হলেও মিলন হয়নি সিংহী নোভা এবং সিংহ বাদশার। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় রংপুর থেকে আনা অসুস্থ বাদশা এখন অনেকটাই সুস্থের পথে। পূর্বের দুর্বলতা কাটিয়ে বাদশা এখন নিজেই উঠে দাঁড়াতে পারছে। বাদশা এখন আউট অব ডেঞ্জার (শঙ্কামুক্ত)। আর পাঁচ-ছয় দিন পর নোভা-বাদশাকে একসঙ্গে থাকতে দেওয়া হবে বলে জানা যায়। প্রসঙ্গত, গত ২১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় সিংহ বাদশা ও সিংহী নোভার সঙ্গে বিয়ে হয়। তবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বাদশার নাম পরিবর্তন করে রেখেছে নভ।

চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা যায়, রংপুর চিড়িয়াখানায় থাকাকালীনই বাদশা অনেকটা দুর্বল ছিল। আনার সময় হৃদস্পন্দন ছিল অস্বাভাবিক। তাছাড়া রংপুর চিড়িয়াখানা থেকে বাদশাকে আনা হয় ট্রাকের ওপর নির্মিত লোহার খাঁচায়। খাঁচা থেকে বের করা হয়েছিল চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে। কিন্তু এ ইনজেকশনের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে লেগেছিল দুই দিন। আর আগে থেকে বাদশার পিঠে ছিল ঘা। লেজের অর্ধেক ছিল কাটা। লেজ না থাকায় পারে না মশা-মাছি তাড়াতে। আগেই ঝরে যায় শরীরের লোম। অন্যদিকে, বন্যপ্রাণী শিকার করে খেতে অভ্যস্ত। তবে রংপুরে বাদশাকে দেওয়া হতো ফ্রিজের খাবার। কিন্তু তাদের জিভে তাজা রক্ত না লাগলে খাওয়ার রুচি তেমন আসে না। ফলে সিংহটি দুর্বল হয়ে পড়ে।

চিড়িয়াখানা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, বাদশার জন্য চট্টগ্রামের পরিবেশটা ছিল সম্পূর্ণ অপরিচিত। নতুন জায়গায় এসে থাকা-খাওয়ার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক হতে একটু সময় লাগছে। এখন আউট অব ডেঞ্জার। আশা করছি আগামী পাঁচ-ছয় দিনের মধ্যেই তাদের একসঙ্গে থাকতে দেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর মো. মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, অনেকটা দুর্বল-অসুস্থ অবস্থায় বাদশাকে রংপুর থেকে আনা হয়েছিল। এমনটি তার জীবন নিয়েও সংশয়ে ছিলাম। তাছাড়া আনার সময় পায়খানা প্রস াব বন্ধ, খাবার না খাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছিল। আনার পর রক্তচাপেও কিছুটা সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু এখন চিকিৎসা শেষে শারীরিক অবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। তিনি বলেন, শরীরের দুর্বলতা কাটাতে নিয়মিত খাওয়ানো হচ্ছে ইলেকট্রোলাইড স্যালাইন। মুখে রুচি আনতে খাবারের সময় দেওয়া হচ্ছে জীবন্ত মুরগি। ওজন বাড়াতে দেওয়া হবে গরুর তাজা মাংস। পিঠের ঘা শুকাতে ক্ষতস্থানে ব্যবহার করা হচ্ছে মলম। খাওয়ানো হচ্ছে ভিটামিন ও কৃমির ওষুধ।

জানা যায়, ইতিমধ্যে বাদশা নোভার আচরণ পর্যবেক্ষণ করছে। আস্তে আস্তে কাছেও আসছে। একদিন নোভা-বাদশা গ্রিলের দুই পাশে পাশাপাশি ঘুমিয়েছে। আর কিছুদিন পরেই তাদেরকে এক খাঁচায় দেওয়া হবে। এরপর তাদের প্রজনন হবে বলে আশা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের।

সর্বশেষ খবর