সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সড়ক দখল করে পুলিশের অবৈধ পার্কিং বাণিজ্য

আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের সামনের সড়ক

মাহবুব মমতাজী

রাজধানীর আগারগাঁও শেরেবাংলা নগরে পাসপোর্ট অফিসের সামনে সড়কের একাংশ দখল করে পার্কিং বসিয়েছে পুলিশ। সেখানে মোটরসাইকেল পার্কিং বাবদ হাজার হাজার টাকার অবৈধ বাণিজ্য করছে শেরেবাংলা নগর থানা। আর এসব ব্যবস্থাপনার জন্য তিন সোর্সকে দায়িত্ব দিয়েছে পুলিশ। এদের একজনের কাজ প্রতিটি মোটরসাইকেল রাখা বাবদ বিশ টাকা করে ফির রসিদ কেটে দেওয়া। আর বাকি দুজনের কাজ মোটরসাইকেল রাখা এবং সেগুলো বের করে দেওয়া। তাদের ছাপানো পার্কিং রসিদে লেখা রয়েছে ‘পাসপোর্ট অফিস মোটরসাইকেল পার্কিং’। আবার সামনে রাখা একটি সাইনবোর্ডে লেখা আছে ‘মোটরসাইকেল পার্কিং শেরেবাংলা নগর থানা’। রসিদের টাকা কোথায় যায় জানতে চাওয়া হলে পার্কিং ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা এক তরুণ জানান, সব টাকা থানায় যায়। গ্যারেজে  দায়িত্বরতদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়। স্থানীয়রা জানান,  গ্যারেজ বসানোর আগে প্রায় প্রতিদিনেই পুলিশের চিহ্নিত সোর্সরা সেখান থেকে মোটরসাইকেল চুরি করত। চুরি হয়ে যাওয়া মোটরসাইকেল মালিকরা থানায় গিয়ে    মামলা করতে চাইলে মামলাও নিত না পুলিশ। এমন অবস্থায় পুলিশ   নিজেরাই  রাস্তার জায়গা দখল করে পার্কিং বসিয়ে ব্যবসা শুরু করে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাসপোর্ট অফিসের ফটকের সামনে থেকে শ্যামলী-আগারগাঁও মেইন সড়ক পর্যন্ত প্রায় ৫০ মিটার জায়গায় মোটরসাইকেলের পার্কিং বসানো হয়েছে। এর জন্য ওই স্থানটি হলুদ রঙের রশি দিয়ে রাখা হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে হাজারের বেশি মোটরসাইকেল আসা-যাওয়া করে। কেউ কেউ ফি দিয়ে বাইসাইকেলও পার্কিং করেন। নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিয়ে রসিদ সংগ্রহ করা না হলে মোটরসাইকেল রাখতে দেওয়া হয় না। পার্কিং ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিতদের নাম জানতে চাওয়া হলে একজনের নাম বলে শফিক। যার আনুমানিক বয়স ৪০। অপরদের নাম সবুজ ও রাসেল। যাদের আনুমানিক বয়স ২১ বছর। ২২ সেপ্টেম্বর আনুমানিক ১২টায় মোটরসাইকেলে করে পাসপোর্ট অফিসে দুজন ব্যক্তি আসেন। যাদের মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২৪০০৯২। এ সময় মোটরসাইকেলের মালিক আরিফ পার্কিং ফি গ্রহণকারী রাসেলকে জিজ্ঞেস করে এই গ্যারেজ কার এবং এসব টাকা কে নেয়? উত্তরে সে বলে, এটা থানার গ্যারেজ। আর সব টাকা নেয় শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। পার্কিং ব্যবস্থাপনা নিয়ে শফিক জানায়, আমাদের থানা থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা পুলিশের কেউ নই। দিন হাজিরা শ্রম দিই। এর জন্য প্রত্যেককে ৪০০ টাকা করে দেওয়া হয়।

শেরেবাংলা নগর  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গণেশ গোপাল বিশ্বাস বলেন, থানা থেকে কোনো পার্কিং বসানো হয়নি। তা পাসপোর্ট অফিসের ডিজি করেছেন।

সর্বশেষ খবর